কোন কোন ব্যাংক প্রবাসীদের লোন দেয় , প্রবাসীদের জন্য কোন কোন ব্যাংক লোন দেয় , প্রবাসীদের জন্য কোন ব্যাংক ভালো ,
সাধারণত বাংলাদেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং সরকারি বিশেষায়িত ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ঋণ সুবিধা দিয়ে থাকে। এখানে কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যাংক এবং তাদের সম্ভাব্য ঋণ সুবিধার ধরন উল্লেখ করা হলো:
১. প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক:
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা একটি ব্যাংক। এটি বিদেশগামী কর্মীদের জন্য অভিবাসন ঋণ এবং প্রবাস ফেরত কর্মীদের জন্য পুনর্বাসন ঋণ প্রদান করে। এই ব্যাংকটি মূলত প্রবাসীদের কর্মসংস্থান ও কল্যাণে সহায়তা করে।
- অভিবাসন ঋণ: বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে এই ঋণ দেওয়া হয়।
- পুনর্বাসন ঋণ: বিদেশ থেকে ফিরে আসা প্রবাসীরা দেশে ছোট ব্যবসা বা অন্য কোন কাজ শুরু করার জন্য এই ঋণ নিতে পারেন।
২. সোনালী ব্যাংক:
সোনালী ব্যাংক "প্রবাসী কর্মসংস্থান ঋণ প্রকল্প" এর আওতায় বিদেশে গমনেচ্ছু বাংলাদেশীদের জন্য ঋণ সুবিধা প্রদান করে। এই ঋণ সাধারণত বিদেশ যাওয়ার প্রাথমিক খরচ মেটানোর জন্য।
৩. অগ্রণী ব্যাংক:
অগ্রণী ব্যাংকও প্রবাসীদের জন্য বিশেষ ঋণ সুবিধা প্রদান করে থাকে, যেমন "অগ্রণী বিদেশ যাওয়ার লোন" ইউনিট।
৪. ব্র্যাক ব্যাংক:
ব্র্যাক ব্যাংক তাদের "প্রবাসি ব্যাংকিং" সেবার মাধ্যমে নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশী (NRB) দের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস অফার করে থাকে, যার মধ্যে কিছু ঋণ সুবিধাও থাকতে পারে। তারা প্রবাসীদের জন্য হোম লোন এবং ব্যক্তিগত ঋণও দিতে পারে, তবে এর জন্য নির্দিষ্ট শর্তাবলী প্রযোজ্য।
৫. NRBC ব্যাংক:
NRBC ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য বিশেষ 'হোম লোন' সুবিধা প্রদান করে থাকে। প্রবাসীরা বাংলাদেশে বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ বা কেনার জন্য এই ঋণ নিতে পারেন এবং বিদেশ থেকে কিস্তি পরিশোধের সুযোগ থাকে।
৬. ইস্টার্ন ব্যাংক (EBL):
ইস্টার্ন ব্যাংক NRB দের জন্য বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট এবং আমানত সুবিধা প্রদান করে, যা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করে। যদিও সরাসরি প্রবাসীদের জন্য বিশেষ ঋণের উল্লেখ নেই, তাদের অন্যান্য ঋণ পণ্যগুলোর ক্ষেত্রে NRB দের জন্য বিশেষ সুবিধা থাকতে পারে।
৭. অন্যান্য ব্যাংক (যেমন Uttara Bank, Social Islami Bank):
অনেক ব্যাংকই (যেমন উত্তরা ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক) তাদের সাধারণ ঋণ পণ্যগুলোর (যেমন ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহ ঋণ, শিক্ষা ঋণ ইত্যাদি) ক্ষেত্রে প্রবাসীদের জন্য কিছু বিশেষ শর্ত বা সুবিধা প্রদান করতে পারে। উত্তরা ব্যাংক "Loan for Foreign Employment" নামে একটি নির্দিষ্ট ঋণ অফার করে।
সাধারণত প্রবাসীদের জন্য ঋণের ধরন হতে পারে:
- অভিবাসন বা বিদেশগমন ঋণ: বিদেশে কাজের জন্য যাওয়ার প্রাথমিক খরচ মেটানোর জন্য।
- গৃহ ঋণ: বাংলাদেশে বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট কেনা বা নির্মাণের জন্য।
- ব্যক্তিগত ঋণ: ব্যক্তিগত প্রয়োজনে, যেমন চিকিৎসা, শিক্ষা, বিবাহ ইত্যাদি।
- ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (SME) ঋণ: প্রবাস ফেরত বা প্রবাসীদের পরিবারবর্গের জন্য ব্যবসা শুরু বা সম্প্রসারণের জন্য।
- কৃষি ঋণ: কৃষি খাতের সাথে জড়িত প্রবাসীদের জন্য।
ঋণ পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং শর্তাবলী সাধারণত নিম্নরূপ হয়:
- বৈধ পাসপোর্ট এবং ভিসার কপি।
- বৈধ ওয়ার্ক পারমিট বা চাকরির চুক্তিপত্র (যদি বিদেশে কর্মরত থাকেন)।
- রেমিটেন্স পাঠানোর প্রমাণ (নির্দিষ্ট সময়ের জন্য)।
- আয়ের উৎস এবং আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণ।
- বাংলাদেশে একজন জামিনদার (ক্ষেত্রবিশেষে)।
- সিআইবি রিপোর্ট (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) ক্লিয়ারেন্স।
- নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে মর্টগেজ বা জামানত।
ঋণ নেওয়ার আগে প্রতিটি ব্যাংকের নির্দিষ্ট শর্তাবলী, সুদের হার এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন