ফেসবুক নাকি ইউটিউব কোনটা ইনকাম বেশি , ফেসবুক নাকি ইউটিউব কোথায় ইনকাম বেশি ,
ফেসবুক এবং ইউটিউব উভয় প্ল্যাটফর্মেই টাকা ইনকাম করার সুযোগ আছে, তবে কিছু নির্দিষ্ট দিক থেকে ইউটিউব এগিয়ে। চলুন, বিস্তারিত জেনে নিই:
ইউটিউব
- বিজ্ঞাপন থেকে আয় (AdSense): ইউটিউবের আয়ের প্রধান উৎস হলো ভিডিওতে দেখানো বিজ্ঞাপন। প্রতি ১০ লাখ ভিউতে ইউটিউবে $2000 এর বেশি আয় হতে পারে, যা ফেসবুকের তুলনায় অনেক বেশি। ইউটিউব তাদের বিজ্ঞাপনের আয়ের ৫৫% কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের দেয়।
- ভিউ এবং এনগেজমেন্ট: ইউটিউবে ভিডিওর এনগেজমেন্ট এবং ওয়াচ টাইম (ভিডিও কতক্ষণ দেখা হয়েছে) আয়ের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত ইউটিউবে দর্শক দীর্ঘ সময় ধরে ভিডিও দেখেন, যা বেশি আয়ের সুযোগ তৈরি করে।
- অন্যান্য আয়ের উৎস: AdSense ছাড়াও ইউটিউবে চ্যানেল মেম্বারশিপ, সুপার চ্যাট, স্পনসরশিপ এবং মার্চেন্ডাইজ বিক্রি করেও আয় করা যায়।
ফেসবুক
- বিজ্ঞাপন থেকে আয় (In-Stream Ads): ফেসবুকের ভিডিওতেও বিজ্ঞাপন দেখানো হয়। তবে, প্রতি ১০ লাখ ভিউতে ফেসবুকে সাধারণত $250-$260 আয় হয়ে থাকে, যা ইউটিউবের চেয়ে কম।
- অন্যান্য আয়ের উৎস: ফেসবুকে স্টারস (Stars), ইন-ভিডিও পারচেজ (In-video purchases), ব্র্যান্ড কোলাবোরেশন (Brand Collaborations) এবং সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে আয় করা যায়। রিলস থেকেও আয় করার সুযোগ আছে।
- কম এনগেজমেন্ট: ইউটিউবের তুলনায় ফেসবুকে ভিডিওর এনগেজমেন্ট এবং ওয়াচ টাইম কম হতে পারে, কারণ ফেসবুক মূলত একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম যেখানে মানুষ দ্রুত স্ক্রল করে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ তুলনা
-
মনিটাইজেশন শর্ত:
- ইউটিউব: সাধারণত মনিটাইজেশনের জন্য ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং বিগত ১২ মাসে ৪০০০ ঘণ্টা ওয়াচ টাইম প্রয়োজন হয়।
- ফেসবুক: ইন-স্ট্রিম বিজ্ঞাপনের জন্য সাধারণত ১০,০০০ ফলোয়ার এবং বিগত ৬০ দিনে ৬০০,০০০ মিনিট ভিউ প্রয়োজন হয়। রিলস মনিটাইজেশনের জন্য ৫টি রিল পোস্ট এবং বিগত ২ মাসে ৬০০,০০০ মিনিট ভিউ প্রয়োজন।
-
আয় কাঠামোর ভিন্নতা: ইউটিউব মূলত ভিডিও ভিউ এবং বিজ্ঞাপনের উপর নির্ভরশীল, যেখানে বিজ্ঞাপন রেট সাধারণত বেশি থাকে। ফেসবুক ব্র্যান্ড কোলাবোরেশন এবং ছোট ছোট ফিচারের মাধ্যমে আয়ের সুযোগ তৈরি করে।
-
দর্শক আচরণ: ইউটিউবের দর্শক সাধারণত নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু দেখতে আসেন এবং দীর্ঘ সময় ধরে ভিডিও দেখতে পছন্দ করেন। ফেসবুকের দর্শক অনেক বেশি বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং তারা বিভিন্ন ধরণের কন্টেন্ট দেখেন, তবে অনেক সময় দ্রুত স্ক্রল করে চলে যান।
উপসংহার
যদি আপনার লক্ষ্য হয় শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন থেকে বেশি আয় করা, তাহলে ইউটিউব একটি ভালো বিকল্প। বিশেষ করে যদি আপনি দীর্ঘ এবং মানসম্মত ভিডিও তৈরি করতে পারেন যা দর্শকদের দীর্ঘ সময় ধরে ধরে রাখতে পারে।
তবে, যদি আপনি আপনার ব্র্যান্ড বা ব্যবসার প্রচার করতে চান এবং স্পন্সরশিপ বা ব্র্যান্ড ডিল থেকে আয় করতে আগ্রহী হন, তাহলে ফেসবুকও একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনার পেজে প্রচুর ফলোয়ার এবং ভালো ইন্টারঅ্যাকশন থাকে।
অনেক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর উভয় প্ল্যাটফর্মেই একই ভিডিও আপলোড করে থাকেন, যাতে তারা উভয় প্ল্যাটফর্ম থেকেই আয় করতে পারেন এবং বেশি দর্শকের কাছে পৌঁছাতে পারেন।
আপনার জন্য কোন প্ল্যাটফর্মটি বেশি উপযুক্ত হবে, তা নির্ভর করে আপনার কন্টেন্টের ধরন, আপনার টার্গেট দর্শক এবং আপনার আয়ের লক্ষ্যের উপর।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন