আবিষ্কারের গল্প

আবিষ্কারের গল্প

কোনো একটি নির্দিষ্ট আবিষ্কারের গল্প জানতে চাইলে, অনুগ্রহ করে তার নাম বলুন। যেহেতু আপনি কোনো নির্দিষ্ট আবিষ্কারের নাম উল্লেখ করেননি, আমি আপনাকে কিছু যুগান্তকারী আবিষ্কারের সংক্ষিপ্ত গল্প জানাচ্ছি:

পেনিসিলিন: একটি দুর্ঘটনাজনিত আবিষ্কার

১৯২৮ সালে স্কটিশ বিজ্ঞানী স্যার আলেকজান্ডার ফ্লেমিং তার ল্যাবে ব্যাকটেরিয়ার ওপর গবেষণা করছিলেন। ছুটির পর ফিরে এসে তিনি দেখতে পান যে তার একটি পেট্রি ডিশে (যেখানে ব্যাকটেরিয়া জন্মানো হয়েছিল) সবুজ রঙের ছাতা বা মোল্ড (mold) জন্ম নিয়েছে। অবাক হয়ে তিনি লক্ষ্য করলেন যে, ওই মোল্ডের আশেপাশে কোনো ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারেনি। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন যে ওই মোল্ড থেকে এমন একটি পদার্থ নিঃসৃত হচ্ছে যা ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলছে।

ফ্লেমিং এই পদার্থটির নাম দেন পেনিসিলিন, যা ছিল বিশ্বের প্রথম অ্যান্টিবায়োটিক। প্রথম দিকে এর ব্যবহার সীমিত থাকলেও, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এর ব্যাপক উৎপাদন শুরু হয় এবং এটি অসংখ্য মানুষের জীবন রক্ষা করে। ফ্লেমিং-এর এই আবিষ্কার ছিল চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে একটি বিপ্লব।


এক্স-রশ্মি: আলোর চেয়েও শক্তিশালী এক রশ্মি

১৮৯৫ সালে জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী উইলহেম কনরাড রন্টজেন ক্যাথোড রশ্মি নিয়ে গবেষণা করছিলেন। এক সন্ধ্যায় তিনি লক্ষ্য করেন যে তার পরীক্ষার যন্ত্রটি একটি কালো কার্ডবোর্ড দিয়ে ঢাকা থাকলেও, কয়েক ফুট দূরে রাখা একটি ফ্লুরোসেন্ট পর্দা জ্বলজ্বল করছে। তিনি বুঝতে পারেন যে, কোনো এক অদৃশ্য রশ্মি ওই কার্ডবোর্ড ভেদ করে আসছে।

রন্টজেন এই নতুন রশ্মিটির নাম দেন "এক্স-রশ্মি" (X-ray), কারণ এর প্রকৃতি তখন তার কাছে অজানা ছিল (গণিতে 'X' অজানা রাশি বোঝাতে ব্যবহৃত হয়)। এরপর তিনি তার স্ত্রীর হাতের উপর এই রশ্মি ফেলে প্রথম এক্স-রে চিত্রটি তোলেন, যেখানে তার হাড়ের গঠন স্পষ্ট দেখা গিয়েছিল। এই আবিষ্কারের ফলে চিকিৎসা জগতে রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি সম্পূর্ণ বদলে যায়।

এই গল্পগুলো থেকে বোঝা যায় যে, অনেক সময় আবিষ্কার পরিকল্পিতভাবে হয় না, বরং পর্যবেক্ষণ এবং কৌতূহলের ফলস্বরূপ ঘটে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন