শাড়ির আবিষ্কারক কে
শাড়ির কোনো একক আবিষ্কারক নেই, কারণ এটি মানব সভ্যতার বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে বিকশিত হয়েছে। এটি কোনো একজন ব্যক্তি বা নির্দিষ্ট কোনো সময়ের আবিষ্কার নয়। শাড়ির ধারণাটি মূলত প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশে উদ্ভূত হয়েছিল এবং সময়ের সাথে সাথে এর পরার ধরন ও বুনন কৌশল পরিবর্তিত হয়েছে।
শাড়ির উৎপত্তি ও ইতিহাস
প্রাচীন যুগ: শাড়ির মতো পোশাকের প্রথম নিদর্শন পাওয়া যায় সিন্ধু উপত্যকা সভ্যতায় (২৮০০-১৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)। ঐ সময়ের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোতে দেখা যায়, লোকেরা সেলাইবিহীন লম্বা কাপড় পরত। প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে, যেমন ঋগ্বেদ এবং মহাভারতে, শাড়ির উল্লেখ আছে। সংস্কৃত শব্দ 'শাটী' থেকেই 'শাড়ি' শব্দটির উৎপত্তি, যার অর্থ 'কাপড়ের ফালি'।
বিবর্তন: প্রাচীনকালে শাড়ি ছিল তিন-টুকরার একটি পোশাক, যার মধ্যে ছিল:
অন্তরীয়া: নিচের অংশ, যা ধুতি বা লুঙ্গির মতো করে পরা হতো।
উত্তরীয়: কাঁধ বা মাথার ওপর পরা একটি ওড়নার মতো কাপড়।
স্তনপট্ট: বুক ঢাকার জন্য ব্যবহৃত একটি কাপড়।
আধুনিক রূপ: আধুনিক যুগে ব্লাউজ ও পেটিকোটের প্রচলন শুরু হয়, যা শাড়িকে বর্তমান রূপে নিয়ে আসে। উনিশ শতকে জ্ঞানদানন্দিনী দেবী, যিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতৃবধূ ছিলেন, শাড়ি পরার একটি নতুন ও মার্জিত শৈলী প্রবর্তন করেন। এটিই 'ব্রাহ্মিকা শাড়ি' বা 'ঠাকুরবাড়ির শাড়ি' নামে পরিচিতি লাভ করে, যা আজকের শাড়ি পরার সবচেয়ে প্রচলিত ধরন।
সুতরাং, শাড়ি কোনো একজনের আবিষ্কার নয়, বরং এটি হাজার হাজার বছরের সাংস্কৃতিক বিবর্তনের ফল।
শাড়ির কোনো একক আবিষ্কারক নেই, কারণ এটি মানব সভ্যতার বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে বিকশিত হয়েছে। শাড়ির ইতিহাস ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম সভ্যতাগুলোর সঙ্গে জড়িত।
শাড়ির উৎপত্তি ও ইতিহাস 📜
সিন্ধু সভ্যতা (২৮০০-১৮০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ): শাড়ি বা এর মতো পোশাকের প্রথম নিদর্শন পাওয়া যায় সিন্ধু সভ্যতায়। এখানকার প্রত্নতাত্ত্বিক খননে প্রাপ্ত ভাস্কর্যগুলোতে দেখা যায়, নারী ও পুরুষ উভয়েই এক খণ্ড সেলাইবিহীন কাপড় শরীরের চারপাশে জড়িয়ে রাখতেন। এটি ছিল শাড়ির সবচেয়ে প্রাথমিক রূপ।
বৈদিক যুগ: এই সময়ে শাড়ির মতো তিন টুকরা পোশাকের প্রচলন ছিল, যা সংস্কৃত সাহিত্যে উল্লেখ করা হয়েছে:
অন্তরীয়া (Antariya): এটি ছিল কোমরের নিচের অংশকে আবৃত করার জন্য ব্যবহৃত কাপড়, যা অনেকটা ধুতি বা বর্তমান শাড়ির কুঁচির মতো ছিল।
উত্তরীয়া (Uttariya): এটি ছিল একটি ওড়নার মতো কাপড়, যা কাঁধ বা মাথা ঢাকার জন্য ব্যবহৃত হতো।
স্তনপাট্টা (Stanapatta): এটি ছিল একটি বুকের ব্যান্ড, যা পরবর্তীকালে আধুনিক ব্লাউজের রূপ নেয়।
মোগল যুগ ও আধুনিক রূপ: মোগল আমলে সেলাই করা পোশাকের (যেমন: ব্লাউজ) প্রচলন শুরু হয়, যা শাড়ি পরার ধরনে আমূল পরিবর্তন আনে। ব্রিটিশ আমলে জ্ঞানদানন্দিনী দেবী শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজ এবং পেটিকোট পরার একটি সহজ পদ্ধতি চালু করেন, যা বর্তমানে 'নিভি স্টাইল' নামে পরিচিত এবং এটিই শাড়ির আধুনিক পরার কৌশল।
সুতরাং, শাড়ি কোনো একজন ব্যক্তির আবিষ্কার নয়, বরং হাজার হাজার বছরের সাংস্কৃতিক বিবর্তনের ফল।
এই ভিডিওটি শাড়ির বিবর্তনের একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন