ঐকতান

 ঐকতান
ঐকতান (Oikotan) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত একটি বিখ্যাত কবিতা। এটি ১৯৪০ সালে প্রকাশিত তাঁর শেষ কাব্যগ্রন্থ **'শেষ লেখা'**-র অন্তর্ভুক্ত। ### কবিতার বিষয়বস্তু ঐকতান কবিতাটিতে রবীন্দ্রনাথ নিজের সাহিত্যজীবনের একটি গভীর আত্মবিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন। এতে তিনি সাহিত্যকে একটি বিশাল ঐকতান বা অর্কেস্ট্রার সঙ্গে তুলনা করেছেন, যেখানে বিভিন্ন সুর ও বাদ্যযন্ত্রের মতো সমাজের সব স্তরের মানুষের জীবন ও অভিজ্ঞতা স্থান পায়। কবিতার মূল ভাবনাগুলো হলো: * **সাহিত্যের সার্বজনীনতা:** রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন, সাহিত্য শুধু উচ্চবিত্ত বা শিক্ষিত শ্রেণির মানুষের জন্য নয়, বরং সমাজের প্রতিটি মানুষের জীবনের অভিজ্ঞতা, আনন্দ, ও বেদনা তাতে প্রতিফলিত হওয়া উচিত। * **আত্মসমালোচনা:** তিনি স্বীকার করেছেন যে, তাঁর সাহিত্যে সমাজের সাধারণ মানুষ, যেমন কৃষক, শ্রমিক বা জেলেদের জীবন খুব বেশি স্থান পায়নি। তিনি নিজেকে একজন "রাজার দুলাল" হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যিনি সাধারণ মানুষের জীবন থেকে কিছুটা দূরে থেকে গেছেন। * **ভবিষ্যতের প্রতি আহ্বান:** তিনি পরবর্তী প্রজন্মের কবিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা সাহিত্যের এই শূন্যস্থান পূরণ করে। তাদের লেখায় যেন সমাজের প্রান্তিক মানুষের কথা উঠে আসে, যাতে সাহিত্য truly (সত্যিকার অর্থেই) একটি পূর্ণাঙ্গ ঐকতান হয়ে ওঠে। এই কবিতাটি রবীন্দ্রনাথের শেষ জীবনের পরিপক্বতা ও গভীর চিন্তাভাবনার প্রতিফলন। এটি কেবল একটি কবিতা নয়, বরং বাংলা সাহিত্যের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তাঁর একটি দিকনির্দেশনা।

.

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন