খারেজিদের প্রতিষ্ঠাতা কে
খারেজিরা কোনো একক ব্যক্তি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কোনো দল নয়। বরং এটি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিভাজন থেকে সৃষ্ট একটি স্বতন্ত্র মতবাদ। এর উদ্ভব হয়েছিল ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রা.)-এর শাসনামলে।
সিফফিনের যুদ্ধের সময় (৩৭ হিজরী, ৬৫৭ খ্রিষ্টাব্দ) যখন হযরত আলী (রা.) ও সিরিয়ার গভর্নর হযরত মুয়াবিয়া (রা.)-এর মধ্যে যুদ্ধ চলছিল, তখন যুদ্ধ বন্ধ করে সালিসের (মধ্যস্থতার) মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হযরত আলীর (রা.) অনুসারীদের মধ্যে একটি বড় অংশ এই সালিস মেনে নিতে অস্বীকার করে। তারা "লা হুকমা ইল্লা লিল্লাহ" (ফয়সালা করার অধিকার একমাত্র আল্লাহর) স্লোগান তুলে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার দাবি করে। তাদের মতে, মানুষের দ্বারা মীমাংসা করানো আল্লাহর নির্দেশের লঙ্ঘন। এই মতবিরোধের কারণে তারা হযরত আলী (রা.)-এর দল থেকে বেরিয়ে যায়। যারা দল ত্যাগ করেছিল, তাদেরকেই আরবিতে "খারেজি" (অর্থাৎ, যারা বেরিয়ে গেছে) বলা হয়।
অতএব, খারেজি মতবাদের কোনো একক প্রতিষ্ঠাতা নেই, বরং এটি একটি রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মতপার্থক্য থেকে উদ্ভূত একটি দল, যার মূল ভিত্তি ছিল হযরত আলী (রা.)-এর সঙ্গে তাদের মতবিরোধ।
খারেজিদের কোনো একক প্রতিষ্ঠাতা নেই। এটি মূলত একটি মতবাদ, যা চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রা.)-এর খেলাফতকালে একটি রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিভক্তির ফলস্বরূপ উদ্ভব হয়।
উৎপত্তির প্রেক্ষাপট:
হযরত আলী (রা.) এবং সিরিয়ার তৎকালীন গভর্নর হযরত মুয়াবিয়া (রা.)-এর মধ্যে সিফফিনের যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এই মতবাদের উৎপত্তি হয়।
যুদ্ধ যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে, তখন উভয় পক্ষ যুদ্ধ থামিয়ে সালিশের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নেয়।
হযরত আলী (রা.)-এর অনুসারীদের মধ্যে একটি অংশ এই সালিশকে প্রত্যাখ্যান করে। তারা দাবি করে যে, "ফয়সালা করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর, মানুষের নয়"। কুরআনের একটি আয়াত ("হুকুম শুধু আল্লাহরই") ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে তারা এই অবস্থান নেয়।
এই দল তাদের অবস্থান থেকে "খারাজ" বা "বেরিয়ে" যায়। এই কারণেই তাদের "খারেজি" (বহুবচনে "খাওয়ারিজ") বলা হয়, যার অর্থ "যারা দলত্যাগ করেছে" বা "বিদ্রোহী"।
সুতরাং, খারেজি মতবাদের উৎপত্তি কোনো একক ব্যক্তির নেতৃত্বে হয়নি, বরং একটি বিশেষ ঘটনার প্রেক্ষিতে কিছু মানুষ তাদের নিজস্ব ব্যাখ্যার ভিত্তিতে মুসলিমদের মূল ধারা থেকে পৃথক হয়ে এই মতবাদ গড়ে তোলে। তাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল রাজনৈতিক বিরোধের ক্ষেত্রে চরমপন্থা অবলম্বন, মুসলিম শাসক ও কবীরা গুনাহকারীকে কাফের ঘোষণা করা এবং তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ করা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন