ছাতার আবিষ্কারক কে
ছাতার আবিষ্কারক হিসেবে কোনো একক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা কঠিন, কারণ এর ইতিহাস অনেক প্রাচীন। তবে বিভিন্ন সভ্যতায় এর ব্যবহার ও বিবর্তনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ রয়েছে।
ছাতার প্রাথমিক ব্যবহার
ছাতা প্রথমত বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য নয়, বরং সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এবং মর্যাদার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
প্রাচীন মিশর ও মেসোপটেমিয়া: খ্রিস্টপূর্ব ৪,০০০ বছর আগে প্রাচীন মিশর ও মেসোপটেমিয়ার সভ্যতায় ছাতা ব্যবহার করা হতো। সে সময় এটি ছিল শুধুমাত্র রাজা-মহারাজা ও উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের জন্য, যা তাদের ক্ষমতা ও আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
প্রাচীন চীন: চীনেও খ্রিস্টপূর্ব ২১০০ সালের দিকে ছাতার ব্যবহার শুরু হয়। চীনের একটি কিংবদন্তি অনুসারে, লু বান (Lu Ban)-এর স্ত্রী এটি আবিষ্কার করেছিলেন, তবে এর কোনো ঐতিহাসিক প্রমাণ নেই। চীনারাই প্রথম ওয়াটারপ্রুফ ছাতা তৈরি করে, যা বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য ব্যবহৃত হতো।
আধুনিক ছাতার বিবর্তন
আধুনিক ছাতার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে:
জোনাস হ্যাওয়ে (Jonas Hanway): ১৮শ শতকে ব্রিটেনে ছাতা খুব একটা প্রচলিত ছিল না এবং এটিকে নারীদের সামগ্রী হিসেবে গণ্য করা হতো। জোনাস হ্যাওয়ে নামে একজন ইংরেজ পর্যটক ৩০ বছর ধরে প্রকাশ্যে ছাতা ব্যবহার করে এর জনপ্রিয়তা বাড়ান। তার প্রচেষ্টার ফলে পুরুষদের মধ্যেও ছাতা ব্যবহারের প্রচলন শুরু হয়।
স্যামুয়েল ফক্স (Samuel Fox): ১৮৫২ সালে স্যামুয়েল ফক্স স্টিলের ফ্রেম ব্যবহার করে আধুনিক ছাতার নকশা পেটেন্ট করেন, যা ছাতাকে হালকা, মজবুত এবং সহজে ভাঁজ করা যায় এমন একটি কাঠামো দেয়।
সুতরাং, ছাতা কোনো একক ব্যক্তির আবিষ্কার নয়, বরং এটি একটি বিবর্তিত পণ্য যা হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের প্রয়োজনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন