জাহাজের আবিষ্কারক কে
জাহাজ কে আবিষ্কার করেছেন, তা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। কারণ, জুতার মতোই জাহাজের ধারণা কোনো একজন ব্যক্তির একক আবিষ্কার নয়, বরং এটি মানব সভ্যতার বিবর্তনের একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফল।
প্রথম দিকের জলযানগুলো ছিল খুবই সাধারণ। মানুষ সম্ভবত গাছের গুঁড়ি বা ছোট ছোট নৌকা তৈরি করে নদী বা হ্রদে চলাচল শুরু করে। ধীরে ধীরে তারা এই ধরনের জলযানকে আরও বড় ও উন্নত করার কৌশল রপ্ত করে।
তবে, কিছু ঐতিহাসিক তথ্য থেকে জানা যায়:
প্রাচীন মিশরীয়রা: খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ সহস্রাব্দে প্রাচীন মিশরীয়রা প্রথম দিককার পাল-তোলা নৌযান তৈরি করে, যা নীল নদে বাণিজ্য ও পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হতো।
ফিনিকিয়ানরা: প্রায় ১২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে ফিনিকিয়ানরা ভূমধ্যসাগরে বড় আকারের বণিক জাহাজ নির্মাণ শুরু করে, যা দূরপাল্লার বাণিজ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
অস্ট্রোনেশিয়ান জাতিগোষ্ঠী: ইন্দোনেশিয়া ও তার আশপাশের অঞ্চলে বসবাসকারী অস্ট্রোনেশিয়ানরা প্রায় ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে উন্নত পাল ব্যবহার করা শুরু করে এবং সমুদ্রপথে বিশাল দূরত্ব অতিক্রম করে পলিনেশিয়া, মাইক্রোনেশিয়া, এমনকি মাদাগাস্কার পর্যন্ত পৌঁছেছিল।
আধুনিক জাহাজের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক রয়েছে:
বাষ্পচালিত জাহাজ: ১৭৬৯ সালে জেমস ওয়াট বাষ্প ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন, যা পরে জাহাজে ব্যবহার করা হয়। এর ফলে জাহাজ আর বাতাসের গতির ওপর নির্ভরশীল রইল না।
লোহার জাহাজ: উনিশ শতকে কাঠের বদলে লোহা বা ইস্পাত দিয়ে জাহাজ তৈরি শুরু হয়, যা জাহাজের আকার ও ধারণক্ষমতাকে বহু গুণ বাড়িয়ে দেয়।
সুতরাং, জাহাজ আবিষ্কারের পেছনে নির্দিষ্ট কোনো আবিষ্কারকের নাম নেই। এটি বিভিন্ন সভ্যতা ও সময়ের মানুষের সম্মিলিত জ্ঞান ও উদ্ভাবনের ফল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন