তবলা আবিষ্কারক কে
তবলা আবিষ্কার নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো একক আবিষ্কারকের নাম বলা কঠিন। এর উৎপত্তি ও বিবর্তন নিয়ে একাধিক মতবাদ প্রচলিত আছে। তবে সবচেয়ে প্রচলিত এবং জনপ্রিয় বিশ্বাসটি হলো, বিখ্যাত সুফি কবি, গায়ক এবং সঙ্গীতজ্ঞ আমির খসরু (১২৫৩-১৩২৫ খ্রিস্টাব্দ) তবলা আবিষ্কার করেছেন।
প্রচলিত মতবাদ:
আমির খসরু: বলা হয়ে থাকে যে, আমির খসরু হিন্দুস্তানি ধ্রুপদী সঙ্গীতের একটি জনপ্রিয় তালযন্ত্র পাখোয়াজকে মাঝখান থেকে ভেঙে দুটি অংশে বিভক্ত করে তবলা ও বাঁয়া তৈরি করেন। তিনি খেয়াল গানের সঙ্গে সঙ্গত করার জন্য একটি নতুন তালযন্ত্র তৈরির চেষ্টা করছিলেন এবং সেই প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ তবলা আবিষ্কার করেন। এটি ভারতীয় ও পার্সি সঙ্গীতের মিশ্রণে তৈরি একটি নতুন যন্ত্র, যা উভয় সংস্কৃতির প্রভাব বহন করে।
অন্যান্য মতবাদ:
অষ্টাদশ শতাব্দীর সুধার খাঁ: কিছু ইতিহাসবিদ মনে করেন যে, তবলা অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে (প্রায় ১৭৩৮ সালে) দিল্লি দরবারের একজন পাখোয়াজ বাদক সুধার খাঁ দ্বারা আবিষ্কৃত হয়। প্রচলিত আছে যে, তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী একজন পাখোয়াজ বাদকের সাথে প্রতিযোগিতায় হেরে গিয়ে রাগে তার পাখোয়াজটি ভেঙে ফেলেন। পরে তিনি ভাঙা দুটি অংশ থেকে তবলা ও বাঁয়া তৈরি করেন।
আরবীয় 'তবল' থেকে উৎপত্তি: কেউ কেউ মনে করেন যে, তবলার নাম এসেছে আরবি শব্দ 'তবল' থেকে, যার অর্থ হলো ড্রাম। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, এটি আরব দেশ থেকে এসেছে এবং ভারতীয় সঙ্গীতের সাথে মিশে বর্তমান রূপ লাভ করেছে।
যদিও আমির খসরুর নামই তবলার আবিষ্কারক হিসেবে সবচেয়ে বেশি পরিচিত, তবে আধুনিক গবেষণায় এই বিষয়ে সুস্পষ্ট লিখিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে, এটা বলা যায় যে, তবলা কোনো একক আবিষ্কারের ফল নয়, বরং বিভিন্ন সময়ের সাংস্কৃতিক ও সঙ্গীত বিষয়ক বিবর্তনের মধ্য দিয়ে এটি আজকের রূপ লাভ করেছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন