দুই স্ত্রী এক স্বামী

 দুই স্ত্রী এক স্বামী


আপনি "দুই স্ত্রী এক স্বামী" (বা বহুবিবাহ) সম্পর্কে জানতে চাইছেন। এটি পুরুষতান্ত্রিক সমাজে প্রচলিত একটি ব্যবস্থা, যা বাংলাদেশে আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।


🏛️ বাংলাদেশে বহুবিবাহ (Polygamy) এর আইনি ও সামাজিক দিক

১. মুসলিমদের ক্ষেত্রে আইন:

  • অনুমতি সাপেক্ষ: বাংলাদেশের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ অনুসারে, একজন মুসলিম পুরুষ তার প্রথম স্ত্রী (বা বিদ্যমান স্ত্রীদের) জীবদ্দশায় দ্বিতীয় বিবাহ করতে চাইলে অবশ্যই সালিশি পরিষদের লিখিত পূর্বানুমতি নিতে হবে।

  • শর্তাবলী: সালিশি পরিষদ এই অনুমতি দেওয়ার আগে বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করে, যেমন:

    • প্রস্তাবিত বিবাহটি আবশ্যক এবং ন্যায়সঙ্গত কিনা।

    • স্বামী আর্থিকভাবে সব স্ত্রীকে সমানভাবে ভরণপোষণ দিতে সক্ষম কিনা।

    • বিদ্যমান স্ত্রীর সম্মতি নেওয়া হয়েছে কিনা (যদিও স্ত্রীর সম্মতি না থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া যেতে পারে)।

  • শাস্তি: অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিবাহ করলে স্বামীকে:

    • বিদ্যমান স্ত্রীকে তার সম্পূর্ণ দেনমোহর অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।

    • এক বছর পর্যন্ত সাধারণ কারাদণ্ড বা ১০,০০০ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

  • স্ত্রীর সংখ্যা: ইসলাম ধর্মে একজন পুরুষকে একসাথে সর্বোচ্চ চারজন স্ত্রী রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তবে শর্ত হলো সকলের প্রতি সমানভাবে ন্যায়বিচার করতে হবে।

২. হিন্দুদের ক্ষেত্রে আইন:

  • বহুবিবাহ: বাংলাদেশে হিন্দু পারিবারিক আইনে হিন্দু পুরুষের বহুবিবাহের ওপর কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই

  • বিবাহবিচ্ছেদ: আইন অনুযায়ী, বিবাহবিচ্ছেদের কোনো বিধান নেই।

৩. সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি:

  • যদিও আইনগতভাবে বহুবিবাহের সুযোগ রয়েছে, বাংলাদেশে এটি খুব কমই দেখা যায় (১% এরও কম)।

  • বর্তমানে সমাজের বেশিরভাগ মানুষ এটিকে না-পছন্দ করেন এবং এই ধরনের কাজ প্রায়শই সামাজিক নিন্দার শিকার হয়।

৪. সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য ক্ষেত্র:

  • নাটক/চলচ্চিত্র: "দুই বধূ এক স্বামী" বা "এক সংসারে দুই বউ" এই ধরনের সম্পর্ক নিয়ে বাংলা নাটক ও চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে, যেখানে এই সম্পর্কের জটিলতা দেখানো হয়।


আপনি কি বাংলাদেশে বহুবিবাহের আইনি প্রক্রিয়া, সামাজিক প্রভাব বা এই বিষয়ের কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চান?

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন