স্বামী স্ত্রীর রোমান্টিক ইসলামিক গল্প

 স্বামী স্ত্রীর রোমান্টিক ইসলামিক গল্প


ইসলামের ইতিহাসে এবং মহানবী (সা.)-এর জীবনে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক ভালোবাসা ও রোমান্টিকতার অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। ইসলামী সংস্কৃতিতে রোমান্টিকতা মানে কেবল প্রেম নয়, বরং তা হলো পারস্পরিক সম্মান, যত্ন, কৌতুক, এবং একে অপরের প্রতি দয়া ও সহানুভূতি প্রদর্শন।

এখানে এমন কিছু শিক্ষণীয় এবং মিষ্টি ইসলামিক গল্পের উল্লেখ করা হলো:

১. হজরত আয়েশা (রা.)-এর সাথে দৌড় প্রতিযোগিতা

এটি নবীজি (সা.)-এর দাম্পত্য জীবনের একটি অত্যন্ত মধুর ও রোমান্টিক ঘটনা।

একবার হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন: "আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। তখন আমি বেশ হালকা-পাতলা ছিলাম। তিনি (সা.) আমাকে বললেন, ‘এসো, আমরা দৌড় প্রতিযোগিতা করি।’ আমরা দৌড়ালাম এবং আমি তাঁকে পেছনে ফেলে দিলাম। (এরপর তিনি চুপ করে গেলেন।)

পরবর্তীকালে, যখন আমার শরীর কিছুটা ভারী হলো, তখন আমরা আবারও সফর করছিলাম। তিনি আবারও বললেন, ‘এসো, আমরা দৌড় প্রতিযোগিতা করি।’ আমরা দৌড়ালাম, এবং এবার তিনি আমাকে পেছনে ফেলে দিলেন।

তখন তিনি হাসিমুখে বললেন, 'এই হলো সেই দিনের (প্রথম প্রতিযোগিতার) বদলা!'" (আহমাদ, আবু দাউদ)

শিক্ষা: স্ত্রীকে আনন্দ দেওয়া এবং তাঁর সাথে কৌতুক করা আদর্শ স্বামীর বৈশিষ্ট্য। এমনকি সাংসারিক জীবনেও রোমান্টিকতা ও মজার মুহূর্ত থাকা উচিত।

২. একই স্থানে মুখ রেখে পান করা

নবীজি (সা.) তাঁর স্ত্রী আয়েশা (রা.)-কে কতটা ভালোবাসতেন, তা এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট।

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন: "আমি ঋতুস্রাবের অবস্থায় পানি পান করে নবীজি (সা.)-কে দিতাম। তিনি আমার মুখ রাখার স্থানেই তাঁর মুখ রেখে পান করতেন। আমি যখন হাড়ের মাংস খেয়ে শেষ করতাম, তিনি তা গ্রহণ করে আমার মুখ লাগানোর স্থানেই মুখ লাগাতেন।" (মুসলিম)

শিক্ষা: এই ঘটনা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গভীরতম অন্তরঙ্গতা, মানসিক নৈকট্য এবং একে অপরের প্রতি নিখাদ ভালোবাসা প্রকাশ করে, যেখানে স্ত্রীর ব্যবহৃত স্থানটিকেও স্বামী পবিত্র ও প্রিয় মনে করেন।

৩. জিবরীল (আ.)-এর মাধ্যমে সালাম পৌঁছানো

এটি স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীকে দেওয়া এক বিশাল সম্মান এবং ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যম।

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সা.) এসে বলেন, "হে আয়েশ! এই মাত্র জিবরীল (আ.) তোমাকে সালাম দিয়ে গেলেন।" (বুখারী, মুসলিম)

শিক্ষা: স্বামী যখন স্ত্রীকে সম্মান জানানোর জন্য সামান্য সুযোগও ছাড়েন না, তখন সেই সম্পর্ক কতটা মধুর ও মর্যাদাপূর্ণ হয়, তা সহজেই অনুমেয়। নবীজি (সা.) স্ত্রীকে আল্লাহর একজন মহান ফেরেশতার পক্ষ থেকে সালাম পাওয়ার সংবাদ দিয়ে তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধি করেছিলেন।

৪. স্বামীর জন্য পরিপাটি থাকা

এটি নবীজি (সা.)-এর সাধারণ উপদেশ এবং ব্যক্তিগত অভ্যাস ছিল। তিনি বলতেন:

"আমি আমার স্ত্রীর জন্য পরিপাটি থাকতে পছন্দ করি, যেমন আমিও চাই স্ত্রী আমার জন্য সাজুক।" (বাইহাকী, হাদিস: ১৪৭২৮)

শিক্ষা: সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতা শুধু বাইরে বা অন্যের জন্য নয়, বরং স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের জন্য পরিপাটি থাকা উচিত। এটিও ভালোবাসার একটি অন্যতম প্রকাশ।

৫. হযরত খাদিজা (রা.)-এর প্রতি নবীজি (সা.)-এর অটুট প্রেম

নবীজি (সা.) তাঁর প্রথম স্ত্রী খাদিজা (রা.)-কে প্রচণ্ড ভালোবাসতেন। খাদিজা (রা.)-এর মৃত্যুর পরও নবীজি (সা.) তাঁকে স্মরণ করতেন এবং তাঁর বন্ধুদের কাছে উপহার পাঠাতেন।

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন: "নবীজি (সা.) খাদিজাকে এত বেশি স্মরণ করতেন যে, আমার মাঝে মাঝে ঈর্ষা হতো। তিনি যখনই কোনো ভেড়া জবাই করতেন, বলতেন, 'খাদিজার বন্ধুদের কাছে পাঠিয়ে দাও।'" (মুসলিম)

শিক্ষা: ভালোবাসা শুধু জীবদ্দশায় নয়, বরং তা মৃত্যুর পরেও অটুট থাকে এবং প্রিয়জনের সাথে সম্পর্কিত সকলের প্রতি স্নেহ প্রকাশের মাধ্যমে তা ফুটে ওঠে।

এই গল্পগুলি প্রমাণ করে যে ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক শুধু দায়িত্ব ও কর্তব্যের নয়, বরং তা পারস্পরিক ভালোবাসা, যত্ন, সম্মান এবং নির্মল রোমান্টিকতার এক পবিত্র বন্ধন।


ইসলামের ইতিহাসে এবং মহানবী (সা.)-এর জীবনে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক ভালোবাসা ও রোমান্টিকতার অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। ইসলামী সংস্কৃতিতে রোমান্টিকতা মানে কেবল প্রেম নয়, বরং তা হলো পারস্পরিক সম্মান, যত্ন, কৌতুক, এবং একে অপরের প্রতি দয়া ও সহানুভূতি প্রদর্শন।

এখানে এমন কিছু শিক্ষণীয় এবং মিষ্টি ইসলামিক গল্পের উল্লেখ করা হলো:

১. হজরত আয়েশা (রা.)-এর সাথে দৌড় প্রতিযোগিতা

এটি নবীজি (সা.)-এর দাম্পত্য জীবনের একটি অত্যন্ত মধুর ও রোমান্টিক ঘটনা।

একবার হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন: "আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। তখন আমি বেশ হালকা-পাতলা ছিলাম। তিনি (সা.) আমাকে বললেন, ‘এসো, আমরা দৌড় প্রতিযোগিতা করি।’ আমরা দৌড়ালাম এবং আমি তাঁকে পেছনে ফেলে দিলাম। (এরপর তিনি চুপ করে গেলেন।)

পরবর্তীকালে, যখন আমার শরীর কিছুটা ভারী হলো, তখন আমরা আবারও সফর করছিলাম। তিনি আবারও বললেন, ‘এসো, আমরা দৌড় প্রতিযোগিতা করি।’ আমরা দৌড়ালাম, এবং এবার তিনি আমাকে পেছনে ফেলে দিলেন।

তখন তিনি হাসিমুখে বললেন, 'এই হলো সেই দিনের (প্রথম প্রতিযোগিতার) বদলা!'" (আহমাদ, আবু দাউদ)

শিক্ষা: স্ত্রীকে আনন্দ দেওয়া এবং তাঁর সাথে কৌতুক করা আদর্শ স্বামীর বৈশিষ্ট্য। এমনকি সাংসারিক জীবনেও রোমান্টিকতা ও মজার মুহূর্ত থাকা উচিত।

২. একই স্থানে মুখ রেখে পান করা

নবীজি (সা.) তাঁর স্ত্রী আয়েশা (রা.)-কে কতটা ভালোবাসতেন, তা এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট।

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন: "আমি ঋতুস্রাবের অবস্থায় পানি পান করে নবীজি (সা.)-কে দিতাম। তিনি আমার মুখ রাখার স্থানেই তাঁর মুখ রেখে পান করতেন। আমি যখন হাড়ের মাংস খেয়ে শেষ করতাম, তিনি তা গ্রহণ করে আমার মুখ লাগানোর স্থানেই মুখ লাগাতেন।" (মুসলিম)

শিক্ষা: এই ঘটনা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গভীরতম অন্তরঙ্গতা, মানসিক নৈকট্য এবং একে অপরের প্রতি নিখাদ ভালোবাসা প্রকাশ করে, যেখানে স্ত্রীর ব্যবহৃত স্থানটিকেও স্বামী পবিত্র ও প্রিয় মনে করেন।

৩. জিবরীল (আ.)-এর মাধ্যমে সালাম পৌঁছানো

এটি স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীকে দেওয়া এক বিশাল সম্মান এবং ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যম।

হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সা.) এসে বলেন, "হে আয়েশ! এই মাত্র জিবরীল (আ.) তোমাকে সালাম দিয়ে গেলেন।" (বুখারী, মুসলিম)

শিক্ষা: স্বামী যখন স্ত্রীকে সম্মান জানানোর জন্য সামান্য সুযোগও ছাড়েন না, তখন সেই সম্পর্ক কতটা মধুর ও মর্যাদাপূর্ণ হয়, তা সহজেই অনুমেয়। নবীজি (সা.) স্ত্রীকে আল্লাহর একজন মহান ফেরেশতার পক্ষ থেকে সালাম পাওয়ার সংবাদ দিয়ে তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধি করেছিলেন।

৪. স্বামীর জন্য পরিপাটি থাকা

এটি নবীজি (সা.)-এর সাধারণ উপদেশ এবং ব্যক্তিগত অভ্যাস ছিল। তিনি বলতেন:

"আমি আমার স্ত্রীর জন্য পরিপাটি থাকতে পছন্দ করি, যেমন আমিও চাই স্ত্রী আমার জন্য সাজুক।" (বাইহাকী, হাদিস: ১৪৭২৮)

শিক্ষা: সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতা শুধু বাইরে বা অন্যের জন্য নয়, বরং স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের জন্য পরিপাটি থাকা উচিত। এটিও ভালোবাসার একটি অন্যতম প্রকাশ।

৫. হযরত খাদিজা (রা.)-এর প্রতি নবীজি (সা.)-এর অটুট প্রেম

নবীজি (সা.) তাঁর প্রথম স্ত্রী খাদিজা (রা.)-কে প্রচণ্ড ভালোবাসতেন। খাদিজা (রা.)-এর মৃত্যুর পরও নবীজি (সা.) তাঁকে স্মরণ করতেন এবং তাঁর বন্ধুদের কাছে উপহার পাঠাতেন।

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন: "নবীজি (সা.) খাদিজাকে এত বেশি স্মরণ করতেন যে, আমার মাঝে মাঝে ঈর্ষা হতো। তিনি যখনই কোনো ভেড়া জবাই করতেন, বলতেন, 'খাদিজার বন্ধুদের কাছে পাঠিয়ে দাও।'" (মুসলিম)

শিক্ষা: ভালোবাসা শুধু জীবদ্দশায় নয়, বরং তা মৃত্যুর পরেও অটুট থাকে এবং প্রিয়জনের সাথে সম্পর্কিত সকলের প্রতি স্নেহ প্রকাশের মাধ্যমে তা ফুটে ওঠে।

এই গল্পগুলি প্রমাণ করে যে ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক শুধু দায়িত্ব ও কর্তব্যের নয়, বরং তা পারস্পরিক ভালোবাসা, যত্ন, সম্মান এবং নির্মল রোমান্টিকতার এক পবিত্র বন্ধন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন