জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর 2026

 জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর 2026


আপনার প্রশ্নের মূল বিষয়বস্তু হলো আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর, যা ২০২৬ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য উপযোগী।

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পটি নতুন শিক্ষাক্রমের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, তাই প্রশ্নের ধরনও কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। নিচে গতানুগতিক ও নতুন ধারার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করা হলো:

📚 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

১. সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (Short Answer Questions)

প্রশ্নউত্তর
১. জ্ঞানচক্ষু কথাটির অর্থ কী?জ্ঞানচক্ষু কথাটির অর্থ হলো জ্ঞানের উন্মেষ বা সঠিক উপলব্ধি। গল্পে, তপন যখন বুঝতে পারে যে লেখালেখি ব্যাপারটা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য কতখানি কঠিন এবং তার লেখা ছাপার অক্ষরে দেখেই লেখক হওয়া যায় না, তখনই তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়।
২. তপনের লেখা গল্পটি কোন পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল?তপনের লেখা গল্পটি তার ছোট মেসোর বন্ধু 'সন্ধ্যাতারা' নামক একটি অবাস্তব/কল্পনার (কাল্পনিক) পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল।
৩. তপন লেখা গল্পটির নাম কী ছিল?তপন লেখা গল্পটির নাম ছিল 'প্রথম দিন'
৪. মেসোর কারেকশন করার কথা শুনে তপনের কী মনে হয়েছিল?মেসোর কারেকশন করার কথা শুনে তপনের মনে হয়েছিল, "গল্পের কোনো ভুল হয়নি।" সে মনে করেছিল ছোট মেসো তার গল্পটিকে শুধুমাত্র সহজ সরল ভাষায় প্রকাশ করে দিয়েছেন।
৫. তপনের নতুন মেসোমশাইয়ের পেশা কী ছিল?তপনের নতুন মেসোমশাই ছিলেন একজন লেখক এবং পেশায় তিনি ছিলেন একজন কলেজের অধ্যাপক

২. দীর্ঘ উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (Descriptive/Analytical Questions)

১. "কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।"— কোন কথা শুনে, কেন তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল?

উত্তর:

  • কোন কথা শুনে: তপনের নতুন মেসোমশাই একজন লেখক। এই কথাটি শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গিয়েছিল।

  • কারণ: তপনের ধারণা ছিল লেখক মানেই আকাশের কোনো দেবতা বা অন্য জগতের মানুষ। তার চোখে লেখক মানে বইয়ের ছাপা অক্ষরের এক বিশাল রহস্যময় ব্যক্তিত্ব। সেই লেখক তার বাড়িতে, একেবারে তার সামনে বসে আছেন এবং সাধারণ মানুষের মতোই জীবন যাপন করেন, এই ব্যাপারটা তার কল্পনার বাইরে ছিল। এই অবিশ্বাস্য আবিষ্কার তার শিশু মনে চরম বিস্ময় সৃষ্টি করে, তাই তার চোখ মার্বেলের মতো বড় হয়ে গিয়েছিল।

২. "রত্নের মূল্য জহুরীর কাছেই।"— মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

  • মন্তব্যের উৎস: তপনের ছোট মাসি এই কথাটি বলেছিলেন যখন তিনি তপনের লেখা গল্পটি মেসোমশাইকে দেখিয়ে ছাপানোর প্রস্তাব করেন।

  • তাৎপর্য: এখানে 'রত্ন' বলতে বোঝানো হয়েছে তপনের লেখা গল্প বা তার ভেতরের প্রতিভাকে, আর 'জহুরী' বলতে বোঝানো হয়েছে লেখক মেসোমশাইকে, যিনি সাহিত্যের মূল্য বোঝেন। মাসি বোঝাতে চেয়েছিলেন, একজন লেখকের কাছেই অন্য একটি লেখার মূল্য সবচেয়ে বেশি। এই মন্তব্যের মাধ্যমে মাসি একদিকে যেমন তপনের প্রতিভার কদর করেছিলেন, তেমনি মেসোর ক্ষমতা ও অবস্থানকে মহিমান্বিত করেছিলেন।

৩. "এর থেকে দুঃখের কিছু নেই।"— কীসের থেকে দুঃখের কিছু নেই? উক্তিটির মাধ্যমে তপনের কোন অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তর:

  • কীসের থেকে দুঃখের কিছু নেই: তপনের নিজের লেখা গল্প 'প্রথম দিন' যখন 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপা হয়, তখন সে দেখে যে তার মেসোমশাই সেটি আগাগোড়া শুধরে, পাল্টে এবং প্রায় নতুন করে ছাপিয়েছেন। অর্থাৎ, গল্পটি লেখকের নামে ছাপা হলেও তা তপনের মৌলিক লেখা ছিল না। এই মিথ্যা পরিচয়ের দুঃখের থেকে আর কিছু কষ্টের নেই।

  • অনুভূতির প্রকাশ: এই উক্তিটির মাধ্যমে তপনের গভীর অভিমান, আত্মমর্যাদার হানি এবং চরম হতাশার অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে। তার কাছে গল্প ছাপা হওয়ার আনন্দ ফিকে হয়ে গিয়েছিল যখন সে আবিষ্কার করে যে তার নিজের কৃতিত্ব বলে আর কিছু নেই। তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় এবং সে বুঝতে পারে তার লেখাটা আসলে করুণার পাত্র হয়েছিল। এই অভিজ্ঞতা তার ভেতরের শিশুসুলভ অহংকারকে চূর্ণ করে এবং সে শপথ নেয় যে কোনোদিন নিজের কাঁচা লেখা ছাপতে দেবে না, বরং নিজের লেখাটিকেই ছাপার অক্ষরে দেখতে চাইবে।


৩. রচনাধর্মী/মূল্যায়ন ভিত্তিক প্রশ্ন (Value-Based Question)

১. 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষু কীভাবে উন্মোচিত হয়েছিল— বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন হলো গল্পের কেন্দ্রীয় থিম। এই উন্মোচন একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ঘটেছিল, যা তার ভুল ধারণা ভেঙে দেয়।

  1. প্রথম পর্ব (বিস্ময়): তপনের প্রথম জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হয় যখন সে জানতে পারে তার মেসোমশাই একজন লেখক। লেখক মানে সাধারণ মানুষ— এই সত্যটি আবিষ্কার করে সে প্রথমে বিস্মিত হয় এবং উৎসাহ পায়।

  2. দ্বিতীয় পর্ব (আশা): সে নিজে গল্প লিখে ফেলে এবং তার মাসি ও মেসোমশাইয়ের মাধ্যমে সেটি পত্রিকায় ছাপার সুযোগ পায়। তার মনে চরম আনন্দ ও গর্বের সৃষ্টি হয়।

  3. চূড়ান্ত পর্ব (তিক্ততা ও উপলব্ধি): যখন ছাপা হওয়া 'প্রথম দিন' গল্পটি সে পড়ে, তখন দেখে যে মেসোমশাই পুরো গল্পটি 'কারেকশন'-এর নামে বদলে দিয়েছেন। তার নিজের লেখা বলে সেখানে কিছুই অবশিষ্ট নেই। এই আবিষ্কার তার কাছে মিথ্যা পরিচয়ের যন্ত্রণা নিয়ে আসে। সে বুঝতে পারে, তার লেখাটা সহানুভূতি বা করুণার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তার প্রতিভার স্বীকৃতি হিসেবে নয়।

  4. জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন: এই দুঃখজনক মুহূর্তেই তার আসল জ্ঞানচক্ষু বা সঠিক উপলব্ধি হয়। সে বুঝতে পারে, লেখক হওয়ার পথ সহজ নয়। খ্যাতি বা প্রশংসা পাওয়ার চেয়ে মৌলিকতা ও স্বকীয়তার গুরুত্ব অনেক বেশি। এই উপলব্ধির পর সে প্রতিজ্ঞা করে, যে কোনো দিন নিজের কাঁচা লেখা ছাপতে দেবে না।

সুতরাং, এই গল্পে জ্ঞানচক্ষু হলো লেখকের কঠিন জীবনের বাস্তবতা এবং নিজের প্রতিভার মূল্য সম্পর্কে তপনের শিশু মন থেকে প্রাপ্ত এক প্রাপ্তবয়স্ক উপলব্ধি






আপনার প্রশ্নের মূল বিষয়বস্তু হলো আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর, যা ২০২৬ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য উপযোগী।

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পটি নতুন শিক্ষাক্রমের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, তাই প্রশ্নের ধরনও কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। নিচে গতানুগতিক ও নতুন ধারার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করা হলো:

📚 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

১. সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (Short Answer Questions)

প্রশ্নউত্তর
১. জ্ঞানচক্ষু কথাটির অর্থ কী?জ্ঞানচক্ষু কথাটির অর্থ হলো জ্ঞানের উন্মেষ বা সঠিক উপলব্ধি। গল্পে, তপন যখন বুঝতে পারে যে লেখালেখি ব্যাপারটা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য কতখানি কঠিন এবং তার লেখা ছাপার অক্ষরে দেখেই লেখক হওয়া যায় না, তখনই তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়।
২. তপনের লেখা গল্পটি কোন পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল?তপনের লেখা গল্পটি তার ছোট মেসোর বন্ধু 'সন্ধ্যাতারা' নামক একটি অবাস্তব/কল্পনার (কাল্পনিক) পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল।
৩. তপন লেখা গল্পটির নাম কী ছিল?তপন লেখা গল্পটির নাম ছিল 'প্রথম দিন'
৪. মেসোর কারেকশন করার কথা শুনে তপনের কী মনে হয়েছিল?মেসোর কারেকশন করার কথা শুনে তপনের মনে হয়েছিল, "গল্পের কোনো ভুল হয়নি।" সে মনে করেছিল ছোট মেসো তার গল্পটিকে শুধুমাত্র সহজ সরল ভাষায় প্রকাশ করে দিয়েছেন।
৫. তপনের নতুন মেসোমশাইয়ের পেশা কী ছিল?তপনের নতুন মেসোমশাই ছিলেন একজন লেখক এবং পেশায় তিনি ছিলেন একজন কলেজের অধ্যাপক

২. দীর্ঘ উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (Descriptive/Analytical Questions)

১. "কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।"— কোন কথা শুনে, কেন তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল?

উত্তর:

  • কোন কথা শুনে: তপনের নতুন মেসোমশাই একজন লেখক। এই কথাটি শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গিয়েছিল।

  • কারণ: তপনের ধারণা ছিল লেখক মানেই আকাশের কোনো দেবতা বা অন্য জগতের মানুষ। তার চোখে লেখক মানে বইয়ের ছাপা অক্ষরের এক বিশাল রহস্যময় ব্যক্তিত্ব। সেই লেখক তার বাড়িতে, একেবারে তার সামনে বসে আছেন এবং সাধারণ মানুষের মতোই জীবন যাপন করেন, এই ব্যাপারটা তার কল্পনার বাইরে ছিল। এই অবিশ্বাস্য আবিষ্কার তার শিশু মনে চরম বিস্ময় সৃষ্টি করে, তাই তার চোখ মার্বেলের মতো বড় হয়ে গিয়েছিল।

২. "রত্নের মূল্য জহুরীর কাছেই।"— মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

  • মন্তব্যের উৎস: তপনের ছোট মাসি এই কথাটি বলেছিলেন যখন তিনি তপনের লেখা গল্পটি মেসোমশাইকে দেখিয়ে ছাপানোর প্রস্তাব করেন।

  • তাৎপর্য: এখানে 'রত্ন' বলতে বোঝানো হয়েছে তপনের লেখা গল্প বা তার ভেতরের প্রতিভাকে, আর 'জহুরী' বলতে বোঝানো হয়েছে লেখক মেসোমশাইকে, যিনি সাহিত্যের মূল্য বোঝেন। মাসি বোঝাতে চেয়েছিলেন, একজন লেখকের কাছেই অন্য একটি লেখার মূল্য সবচেয়ে বেশি। এই মন্তব্যের মাধ্যমে মাসি একদিকে যেমন তপনের প্রতিভার কদর করেছিলেন, তেমনি মেসোর ক্ষমতা ও অবস্থানকে মহিমান্বিত করেছিলেন।

৩. "এর থেকে দুঃখের কিছু নেই।"— কীসের থেকে দুঃখের কিছু নেই? উক্তিটির মাধ্যমে তপনের কোন অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তর:

  • কীসের থেকে দুঃখের কিছু নেই: তপনের নিজের লেখা গল্প 'প্রথম দিন' যখন 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপা হয়, তখন সে দেখে যে তার মেসোমশাই সেটি আগাগোড়া শুধরে, পাল্টে এবং প্রায় নতুন করে ছাপিয়েছেন। অর্থাৎ, গল্পটি লেখকের নামে ছাপা হলেও তা তপনের মৌলিক লেখা ছিল না। এই মিথ্যা পরিচয়ের দুঃখের থেকে আর কিছু কষ্টের নেই।

  • অনুভূতির প্রকাশ: এই উক্তিটির মাধ্যমে তপনের গভীর অভিমান, আত্মমর্যাদার হানি এবং চরম হতাশার অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে। তার কাছে গল্প ছাপা হওয়ার আনন্দ ফিকে হয়ে গিয়েছিল যখন সে আবিষ্কার করে যে তার নিজের কৃতিত্ব বলে আর কিছু নেই। তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় এবং সে বুঝতে পারে তার লেখাটা আসলে করুণার পাত্র হয়েছিল। এই অভিজ্ঞতা তার ভেতরের শিশুসুলভ অহংকারকে চূর্ণ করে এবং সে শপথ নেয় যে কোনোদিন নিজের কাঁচা লেখা ছাপতে দেবে না, বরং নিজের লেখাটিকেই ছাপার অক্ষরে দেখতে চাইবে।


৩. রচনাধর্মী/মূল্যায়ন ভিত্তিক প্রশ্ন (Value-Based Question)

১. 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষু কীভাবে উন্মোচিত হয়েছিল— বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন হলো গল্পের কেন্দ্রীয় থিম। এই উন্মোচন একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ঘটেছিল, যা তার ভুল ধারণা ভেঙে দেয়।

  1. প্রথম পর্ব (বিস্ময়): তপনের প্রথম জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হয় যখন সে জানতে পারে তার মেসোমশাই একজন লেখক। লেখক মানে সাধারণ মানুষ— এই সত্যটি আবিষ্কার করে সে প্রথমে বিস্মিত হয় এবং উৎসাহ পায়।

  2. দ্বিতীয় পর্ব (আশা): সে নিজে গল্প লিখে ফেলে এবং তার মাসি ও মেসোমশাইয়ের মাধ্যমে সেটি পত্রিকায় ছাপার সুযোগ পায়। তার মনে চরম আনন্দ ও গর্বের সৃষ্টি হয়।

  3. চূড়ান্ত পর্ব (তিক্ততা ও উপলব্ধি): যখন ছাপা হওয়া 'প্রথম দিন' গল্পটি সে পড়ে, তখন দেখে যে মেসোমশাই পুরো গল্পটি 'কারেকশন'-এর নামে বদলে দিয়েছেন। তার নিজের লেখা বলে সেখানে কিছুই অবশিষ্ট নেই। এই আবিষ্কার তার কাছে মিথ্যা পরিচয়ের যন্ত্রণা নিয়ে আসে। সে বুঝতে পারে, তার লেখাটা সহানুভূতি বা করুণার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তার প্রতিভার স্বীকৃতি হিসেবে নয়।

  4. জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন: এই দুঃখজনক মুহূর্তেই তার আসল জ্ঞানচক্ষু বা সঠিক উপলব্ধি হয়। সে বুঝতে পারে, লেখক হওয়ার পথ সহজ নয়। খ্যাতি বা প্রশংসা পাওয়ার চেয়ে মৌলিকতা ও স্বকীয়তার গুরুত্ব অনেক বেশি। এই উপলব্ধির পর সে প্রতিজ্ঞা করে, যে কোনো দিন নিজের কাঁচা লেখা ছাপতে দেবে না।

সুতরাং, এই গল্পে জ্ঞানচক্ষু হলো লেখকের কঠিন জীবনের বাস্তবতা এবং নিজের প্রতিভার মূল্য সম্পর্কে তপনের শিশু মন থেকে প্রাপ্ত এক প্রাপ্তবয়স্ক উপলব্ধি




আপনার প্রশ্নের মূল বিষয়বস্তু হলো আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর, যা ২০২৬ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য উপযোগী।

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পটি নতুন শিক্ষাক্রমের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, তাই প্রশ্নের ধরনও কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। নিচে গতানুগতিক ও নতুন ধারার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করা হলো:

📚 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

১. সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (Short Answer Questions)

প্রশ্নউত্তর
১. জ্ঞানচক্ষু কথাটির অর্থ কী?জ্ঞানচক্ষু কথাটির অর্থ হলো জ্ঞানের উন্মেষ বা সঠিক উপলব্ধি। গল্পে, তপন যখন বুঝতে পারে যে লেখালেখি ব্যাপারটা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য কতখানি কঠিন এবং তার লেখা ছাপার অক্ষরে দেখেই লেখক হওয়া যায় না, তখনই তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়।
২. তপনের লেখা গল্পটি কোন পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল?তপনের লেখা গল্পটি তার ছোট মেসোর বন্ধু 'সন্ধ্যাতারা' নামক একটি অবাস্তব/কল্পনার (কাল্পনিক) পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল।
৩. তপন লেখা গল্পটির নাম কী ছিল?তপন লেখা গল্পটির নাম ছিল 'প্রথম দিন'
৪. মেসোর কারেকশন করার কথা শুনে তপনের কী মনে হয়েছিল?মেসোর কারেকশন করার কথা শুনে তপনের মনে হয়েছিল, "গল্পের কোনো ভুল হয়নি।" সে মনে করেছিল ছোট মেসো তার গল্পটিকে শুধুমাত্র সহজ সরল ভাষায় প্রকাশ করে দিয়েছেন।
৫. তপনের নতুন মেসোমশাইয়ের পেশা কী ছিল?তপনের নতুন মেসোমশাই ছিলেন একজন লেখক এবং পেশায় তিনি ছিলেন একজন কলেজের অধ্যাপক

২. দীর্ঘ উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (Descriptive/Analytical Questions)

১. "কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।"— কোন কথা শুনে, কেন তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল?

উত্তর:

  • কোন কথা শুনে: তপনের নতুন মেসোমশাই একজন লেখক। এই কথাটি শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গিয়েছিল।

  • কারণ: তপনের ধারণা ছিল লেখক মানেই আকাশের কোনো দেবতা বা অন্য জগতের মানুষ। তার চোখে লেখক মানে বইয়ের ছাপা অক্ষরের এক বিশাল রহস্যময় ব্যক্তিত্ব। সেই লেখক তার বাড়িতে, একেবারে তার সামনে বসে আছেন এবং সাধারণ মানুষের মতোই জীবন যাপন করেন, এই ব্যাপারটা তার কল্পনার বাইরে ছিল। এই অবিশ্বাস্য আবিষ্কার তার শিশু মনে চরম বিস্ময় সৃষ্টি করে, তাই তার চোখ মার্বেলের মতো বড় হয়ে গিয়েছিল।

২. "রত্নের মূল্য জহুরীর কাছেই।"— মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

  • মন্তব্যের উৎস: তপনের ছোট মাসি এই কথাটি বলেছিলেন যখন তিনি তপনের লেখা গল্পটি মেসোমশাইকে দেখিয়ে ছাপানোর প্রস্তাব করেন।

  • তাৎপর্য: এখানে 'রত্ন' বলতে বোঝানো হয়েছে তপনের লেখা গল্প বা তার ভেতরের প্রতিভাকে, আর 'জহুরী' বলতে বোঝানো হয়েছে লেখক মেসোমশাইকে, যিনি সাহিত্যের মূল্য বোঝেন। মাসি বোঝাতে চেয়েছিলেন, একজন লেখকের কাছেই অন্য একটি লেখার মূল্য সবচেয়ে বেশি। এই মন্তব্যের মাধ্যমে মাসি একদিকে যেমন তপনের প্রতিভার কদর করেছিলেন, তেমনি মেসোর ক্ষমতা ও অবস্থানকে মহিমান্বিত করেছিলেন।

৩. "এর থেকে দুঃখের কিছু নেই।"— কীসের থেকে দুঃখের কিছু নেই? উক্তিটির মাধ্যমে তপনের কোন অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তর:

  • কীসের থেকে দুঃখের কিছু নেই: তপনের নিজের লেখা গল্প 'প্রথম দিন' যখন 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপা হয়, তখন সে দেখে যে তার মেসোমশাই সেটি আগাগোড়া শুধরে, পাল্টে এবং প্রায় নতুন করে ছাপিয়েছেন। অর্থাৎ, গল্পটি লেখকের নামে ছাপা হলেও তা তপনের মৌলিক লেখা ছিল না। এই মিথ্যা পরিচয়ের দুঃখের থেকে আর কিছু কষ্টের নেই।

  • অনুভূতির প্রকাশ: এই উক্তিটির মাধ্যমে তপনের গভীর অভিমান, আত্মমর্যাদার হানি এবং চরম হতাশার অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে। তার কাছে গল্প ছাপা হওয়ার আনন্দ ফিকে হয়ে গিয়েছিল যখন সে আবিষ্কার করে যে তার নিজের কৃতিত্ব বলে আর কিছু নেই। তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় এবং সে বুঝতে পারে তার লেখাটা আসলে করুণার পাত্র হয়েছিল। এই অভিজ্ঞতা তার ভেতরের শিশুসুলভ অহংকারকে চূর্ণ করে এবং সে শপথ নেয় যে কোনোদিন নিজের কাঁচা লেখা ছাপতে দেবে না, বরং নিজের লেখাটিকেই ছাপার অক্ষরে দেখতে চাইবে।


৩. রচনাধর্মী/মূল্যায়ন ভিত্তিক প্রশ্ন (Value-Based Question)

১. 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষু কীভাবে উন্মোচিত হয়েছিল— বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন হলো গল্পের কেন্দ্রীয় থিম। এই উন্মোচন একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ঘটেছিল, যা তার ভুল ধারণা ভেঙে দেয়।

  1. প্রথম পর্ব (বিস্ময়): তপনের প্রথম জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হয় যখন সে জানতে পারে তার মেসোমশাই একজন লেখক। লেখক মানে সাধারণ মানুষ— এই সত্যটি আবিষ্কার করে সে প্রথমে বিস্মিত হয় এবং উৎসাহ পায়।

  2. দ্বিতীয় পর্ব (আশা): সে নিজে গল্প লিখে ফেলে এবং তার মাসি ও মেসোমশাইয়ের মাধ্যমে সেটি পত্রিকায় ছাপার সুযোগ পায়। তার মনে চরম আনন্দ ও গর্বের সৃষ্টি হয়।

  3. চূড়ান্ত পর্ব (তিক্ততা ও উপলব্ধি): যখন ছাপা হওয়া 'প্রথম দিন' গল্পটি সে পড়ে, তখন দেখে যে মেসোমশাই পুরো গল্পটি 'কারেকশন'-এর নামে বদলে দিয়েছেন। তার নিজের লেখা বলে সেখানে কিছুই অবশিষ্ট নেই। এই আবিষ্কার তার কাছে মিথ্যা পরিচয়ের যন্ত্রণা নিয়ে আসে। সে বুঝতে পারে, তার লেখাটা সহানুভূতি বা করুণার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তার প্রতিভার স্বীকৃতি হিসেবে নয়।

  4. জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন: এই দুঃখজনক মুহূর্তেই তার আসল জ্ঞানচক্ষু বা সঠিক উপলব্ধি হয়। সে বুঝতে পারে, লেখক হওয়ার পথ সহজ নয়। খ্যাতি বা প্রশংসা পাওয়ার চেয়ে মৌলিকতা ও স্বকীয়তার গুরুত্ব অনেক বেশি। এই উপলব্ধির পর সে প্রতিজ্ঞা করে, যে কোনো দিন নিজের কাঁচা লেখা ছাপতে দেবে না।

সুতরাং, এই গল্পে জ্ঞানচক্ষু হলো লেখকের কঠিন জীবনের বাস্তবতা এবং নিজের প্রতিভার মূল্য সম্পর্কে তপনের শিশু মন থেকে প্রাপ্ত এক প্রাপ্তবয়স্ক উপলব্ধি



আপনার প্রশ্নের মূল বিষয়বস্তু হলো আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর, যা ২০২৬ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য উপযোগী।

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পটি নতুন শিক্ষাক্রমের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, তাই প্রশ্নের ধরনও কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। নিচে গতানুগতিক ও নতুন ধারার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করা হলো:

📚 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

১. সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (Short Answer Questions)

প্রশ্নউত্তর
১. জ্ঞানচক্ষু কথাটির অর্থ কী?জ্ঞানচক্ষু কথাটির অর্থ হলো জ্ঞানের উন্মেষ বা সঠিক উপলব্ধি। গল্পে, তপন যখন বুঝতে পারে যে লেখালেখি ব্যাপারটা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য কতখানি কঠিন এবং তার লেখা ছাপার অক্ষরে দেখেই লেখক হওয়া যায় না, তখনই তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়।
২. তপনের লেখা গল্পটি কোন পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল?তপনের লেখা গল্পটি তার ছোট মেসোর বন্ধু 'সন্ধ্যাতারা' নামক একটি অবাস্তব/কল্পনার (কাল্পনিক) পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল।
৩. তপন লেখা গল্পটির নাম কী ছিল?তপন লেখা গল্পটির নাম ছিল 'প্রথম দিন'
৪. মেসোর কারেকশন করার কথা শুনে তপনের কী মনে হয়েছিল?মেসোর কারেকশন করার কথা শুনে তপনের মনে হয়েছিল, "গল্পের কোনো ভুল হয়নি।" সে মনে করেছিল ছোট মেসো তার গল্পটিকে শুধুমাত্র সহজ সরল ভাষায় প্রকাশ করে দিয়েছেন।
৫. তপনের নতুন মেসোমশাইয়ের পেশা কী ছিল?তপনের নতুন মেসোমশাই ছিলেন একজন লেখক এবং পেশায় তিনি ছিলেন একজন কলেজের অধ্যাপক

২. দীর্ঘ উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (Descriptive/Analytical Questions)

১. "কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।"— কোন কথা শুনে, কেন তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল?

উত্তর:

  • কোন কথা শুনে: তপনের নতুন মেসোমশাই একজন লেখক। এই কথাটি শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গিয়েছিল।

  • কারণ: তপনের ধারণা ছিল লেখক মানেই আকাশের কোনো দেবতা বা অন্য জগতের মানুষ। তার চোখে লেখক মানে বইয়ের ছাপা অক্ষরের এক বিশাল রহস্যময় ব্যক্তিত্ব। সেই লেখক তার বাড়িতে, একেবারে তার সামনে বসে আছেন এবং সাধারণ মানুষের মতোই জীবন যাপন করেন, এই ব্যাপারটা তার কল্পনার বাইরে ছিল। এই অবিশ্বাস্য আবিষ্কার তার শিশু মনে চরম বিস্ময় সৃষ্টি করে, তাই তার চোখ মার্বেলের মতো বড় হয়ে গিয়েছিল।

২. "রত্নের মূল্য জহুরীর কাছেই।"— মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

  • মন্তব্যের উৎস: তপনের ছোট মাসি এই কথাটি বলেছিলেন যখন তিনি তপনের লেখা গল্পটি মেসোমশাইকে দেখিয়ে ছাপানোর প্রস্তাব করেন।

  • তাৎপর্য: এখানে 'রত্ন' বলতে বোঝানো হয়েছে তপনের লেখা গল্প বা তার ভেতরের প্রতিভাকে, আর 'জহুরী' বলতে বোঝানো হয়েছে লেখক মেসোমশাইকে, যিনি সাহিত্যের মূল্য বোঝেন। মাসি বোঝাতে চেয়েছিলেন, একজন লেখকের কাছেই অন্য একটি লেখার মূল্য সবচেয়ে বেশি। এই মন্তব্যের মাধ্যমে মাসি একদিকে যেমন তপনের প্রতিভার কদর করেছিলেন, তেমনি মেসোর ক্ষমতা ও অবস্থানকে মহিমান্বিত করেছিলেন।

৩. "এর থেকে দুঃখের কিছু নেই।"— কীসের থেকে দুঃখের কিছু নেই? উক্তিটির মাধ্যমে তপনের কোন অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তর:

  • কীসের থেকে দুঃখের কিছু নেই: তপনের নিজের লেখা গল্প 'প্রথম দিন' যখন 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপা হয়, তখন সে দেখে যে তার মেসোমশাই সেটি আগাগোড়া শুধরে, পাল্টে এবং প্রায় নতুন করে ছাপিয়েছেন। অর্থাৎ, গল্পটি লেখকের নামে ছাপা হলেও তা তপনের মৌলিক লেখা ছিল না। এই মিথ্যা পরিচয়ের দুঃখের থেকে আর কিছু কষ্টের নেই।

  • অনুভূতির প্রকাশ: এই উক্তিটির মাধ্যমে তপনের গভীর অভিমান, আত্মমর্যাদার হানি এবং চরম হতাশার অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে। তার কাছে গল্প ছাপা হওয়ার আনন্দ ফিকে হয়ে গিয়েছিল যখন সে আবিষ্কার করে যে তার নিজের কৃতিত্ব বলে আর কিছু নেই। তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় এবং সে বুঝতে পারে তার লেখাটা আসলে করুণার পাত্র হয়েছিল। এই অভিজ্ঞতা তার ভেতরের শিশুসুলভ অহংকারকে চূর্ণ করে এবং সে শপথ নেয় যে কোনোদিন নিজের কাঁচা লেখা ছাপতে দেবে না, বরং নিজের লেখাটিকেই ছাপার অক্ষরে দেখতে চাইবে।


৩. রচনাধর্মী/মূল্যায়ন ভিত্তিক প্রশ্ন (Value-Based Question)

১. 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষু কীভাবে উন্মোচিত হয়েছিল— বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন হলো গল্পের কেন্দ্রীয় থিম। এই উন্মোচন একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ঘটেছিল, যা তার ভুল ধারণা ভেঙে দেয়।

  1. প্রথম পর্ব (বিস্ময়): তপনের প্রথম জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হয় যখন সে জানতে পারে তার মেসোমশাই একজন লেখক। লেখক মানে সাধারণ মানুষ— এই সত্যটি আবিষ্কার করে সে প্রথমে বিস্মিত হয় এবং উৎসাহ পায়।

  2. দ্বিতীয় পর্ব (আশা): সে নিজে গল্প লিখে ফেলে এবং তার মাসি ও মেসোমশাইয়ের মাধ্যমে সেটি পত্রিকায় ছাপার সুযোগ পায়। তার মনে চরম আনন্দ ও গর্বের সৃষ্টি হয়।

  3. চূড়ান্ত পর্ব (তিক্ততা ও উপলব্ধি): যখন ছাপা হওয়া 'প্রথম দিন' গল্পটি সে পড়ে, তখন দেখে যে মেসোমশাই পুরো গল্পটি 'কারেকশন'-এর নামে বদলে দিয়েছেন। তার নিজের লেখা বলে সেখানে কিছুই অবশিষ্ট নেই। এই আবিষ্কার তার কাছে মিথ্যা পরিচয়ের যন্ত্রণা নিয়ে আসে। সে বুঝতে পারে, তার লেখাটা সহানুভূতি বা করুণার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তার প্রতিভার স্বীকৃতি হিসেবে নয়।

  4. জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন: এই দুঃখজনক মুহূর্তেই তার আসল জ্ঞানচক্ষু বা সঠিক উপলব্ধি হয়। সে বুঝতে পারে, লেখক হওয়ার পথ সহজ নয়। খ্যাতি বা প্রশংসা পাওয়ার চেয়ে মৌলিকতা ও স্বকীয়তার গুরুত্ব অনেক বেশি। এই উপলব্ধির পর সে প্রতিজ্ঞা করে, যে কোনো দিন নিজের কাঁচা লেখা ছাপতে দেবে না।

সুতরাং, এই গল্পে জ্ঞানচক্ষু হলো লেখকের কঠিন জীবনের বাস্তবতা এবং নিজের প্রতিভার মূল্য সম্পর্কে তপনের শিশু মন থেকে প্রাপ্ত এক প্রাপ্তবয়স্ক উপলব্ধি



আপনার প্রশ্নের মূল বিষয়বস্তু হলো আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর, যা ২০২৬ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য উপযোগী।

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পটি নতুন শিক্ষাক্রমের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, তাই প্রশ্নের ধরনও কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। নিচে গতানুগতিক ও নতুন ধারার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করা হলো:

📚 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

১. সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (Short Answer Questions)

প্রশ্নউত্তর
১. জ্ঞানচক্ষু কথাটির অর্থ কী?জ্ঞানচক্ষু কথাটির অর্থ হলো জ্ঞানের উন্মেষ বা সঠিক উপলব্ধি। গল্পে, তপন যখন বুঝতে পারে যে লেখালেখি ব্যাপারটা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য কতখানি কঠিন এবং তার লেখা ছাপার অক্ষরে দেখেই লেখক হওয়া যায় না, তখনই তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়।
২. তপনের লেখা গল্পটি কোন পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল?তপনের লেখা গল্পটি তার ছোট মেসোর বন্ধু 'সন্ধ্যাতারা' নামক একটি অবাস্তব/কল্পনার (কাল্পনিক) পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল।
৩. তপন লেখা গল্পটির নাম কী ছিল?তপন লেখা গল্পটির নাম ছিল 'প্রথম দিন'
৪. মেসোর কারেকশন করার কথা শুনে তপনের কী মনে হয়েছিল?মেসোর কারেকশন করার কথা শুনে তপনের মনে হয়েছিল, "গল্পের কোনো ভুল হয়নি।" সে মনে করেছিল ছোট মেসো তার গল্পটিকে শুধুমাত্র সহজ সরল ভাষায় প্রকাশ করে দিয়েছেন।
৫. তপনের নতুন মেসোমশাইয়ের পেশা কী ছিল?তপনের নতুন মেসোমশাই ছিলেন একজন লেখক এবং পেশায় তিনি ছিলেন একজন কলেজের অধ্যাপক

২. দীর্ঘ উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (Descriptive/Analytical Questions)

১. "কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।"— কোন কথা শুনে, কেন তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল?

উত্তর:

  • কোন কথা শুনে: তপনের নতুন মেসোমশাই একজন লেখক। এই কথাটি শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গিয়েছিল।

  • কারণ: তপনের ধারণা ছিল লেখক মানেই আকাশের কোনো দেবতা বা অন্য জগতের মানুষ। তার চোখে লেখক মানে বইয়ের ছাপা অক্ষরের এক বিশাল রহস্যময় ব্যক্তিত্ব। সেই লেখক তার বাড়িতে, একেবারে তার সামনে বসে আছেন এবং সাধারণ মানুষের মতোই জীবন যাপন করেন, এই ব্যাপারটা তার কল্পনার বাইরে ছিল। এই অবিশ্বাস্য আবিষ্কার তার শিশু মনে চরম বিস্ময় সৃষ্টি করে, তাই তার চোখ মার্বেলের মতো বড় হয়ে গিয়েছিল।

২. "রত্নের মূল্য জহুরীর কাছেই।"— মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

  • মন্তব্যের উৎস: তপনের ছোট মাসি এই কথাটি বলেছিলেন যখন তিনি তপনের লেখা গল্পটি মেসোমশাইকে দেখিয়ে ছাপানোর প্রস্তাব করেন।

  • তাৎপর্য: এখানে 'রত্ন' বলতে বোঝানো হয়েছে তপনের লেখা গল্প বা তার ভেতরের প্রতিভাকে, আর 'জহুরী' বলতে বোঝানো হয়েছে লেখক মেসোমশাইকে, যিনি সাহিত্যের মূল্য বোঝেন। মাসি বোঝাতে চেয়েছিলেন, একজন লেখকের কাছেই অন্য একটি লেখার মূল্য সবচেয়ে বেশি। এই মন্তব্যের মাধ্যমে মাসি একদিকে যেমন তপনের প্রতিভার কদর করেছিলেন, তেমনি মেসোর ক্ষমতা ও অবস্থানকে মহিমান্বিত করেছিলেন।

৩. "এর থেকে দুঃখের কিছু নেই।"— কীসের থেকে দুঃখের কিছু নেই? উক্তিটির মাধ্যমে তপনের কোন অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তর:

  • কীসের থেকে দুঃখের কিছু নেই: তপনের নিজের লেখা গল্প 'প্রথম দিন' যখন 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপা হয়, তখন সে দেখে যে তার মেসোমশাই সেটি আগাগোড়া শুধরে, পাল্টে এবং প্রায় নতুন করে ছাপিয়েছেন। অর্থাৎ, গল্পটি লেখকের নামে ছাপা হলেও তা তপনের মৌলিক লেখা ছিল না। এই মিথ্যা পরিচয়ের দুঃখের থেকে আর কিছু কষ্টের নেই।

  • অনুভূতির প্রকাশ: এই উক্তিটির মাধ্যমে তপনের গভীর অভিমান, আত্মমর্যাদার হানি এবং চরম হতাশার অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে। তার কাছে গল্প ছাপা হওয়ার আনন্দ ফিকে হয়ে গিয়েছিল যখন সে আবিষ্কার করে যে তার নিজের কৃতিত্ব বলে আর কিছু নেই। তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় এবং সে বুঝতে পারে তার লেখাটা আসলে করুণার পাত্র হয়েছিল। এই অভিজ্ঞতা তার ভেতরের শিশুসুলভ অহংকারকে চূর্ণ করে এবং সে শপথ নেয় যে কোনোদিন নিজের কাঁচা লেখা ছাপতে দেবে না, বরং নিজের লেখাটিকেই ছাপার অক্ষরে দেখতে চাইবে।


৩. রচনাধর্মী/মূল্যায়ন ভিত্তিক প্রশ্ন (Value-Based Question)

১. 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষু কীভাবে উন্মোচিত হয়েছিল— বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন হলো গল্পের কেন্দ্রীয় থিম। এই উন্মোচন একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ঘটেছিল, যা তার ভুল ধারণা ভেঙে দেয়।

  1. প্রথম পর্ব (বিস্ময়): তপনের প্রথম জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হয় যখন সে জানতে পারে তার মেসোমশাই একজন লেখক। লেখক মানে সাধারণ মানুষ— এই সত্যটি আবিষ্কার করে সে প্রথমে বিস্মিত হয় এবং উৎসাহ পায়।

  2. দ্বিতীয় পর্ব (আশা): সে নিজে গল্প লিখে ফেলে এবং তার মাসি ও মেসোমশাইয়ের মাধ্যমে সেটি পত্রিকায় ছাপার সুযোগ পায়। তার মনে চরম আনন্দ ও গর্বের সৃষ্টি হয়।

  3. চূড়ান্ত পর্ব (তিক্ততা ও উপলব্ধি): যখন ছাপা হওয়া 'প্রথম দিন' গল্পটি সে পড়ে, তখন দেখে যে মেসোমশাই পুরো গল্পটি 'কারেকশন'-এর নামে বদলে দিয়েছেন। তার নিজের লেখা বলে সেখানে কিছুই অবশিষ্ট নেই। এই আবিষ্কার তার কাছে মিথ্যা পরিচয়ের যন্ত্রণা নিয়ে আসে। সে বুঝতে পারে, তার লেখাটা সহানুভূতি বা করুণার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তার প্রতিভার স্বীকৃতি হিসেবে নয়।

  4. জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন: এই দুঃখজনক মুহূর্তেই তার আসল জ্ঞানচক্ষু বা সঠিক উপলব্ধি হয়। সে বুঝতে পারে, লেখক হওয়ার পথ সহজ নয়। খ্যাতি বা প্রশংসা পাওয়ার চেয়ে মৌলিকতা ও স্বকীয়তার গুরুত্ব অনেক বেশি। এই উপলব্ধির পর সে প্রতিজ্ঞা করে, যে কোনো দিন নিজের কাঁচা লেখা ছাপতে দেবে না।

সুতরাং, এই গল্পে জ্ঞানচক্ষু হলো লেখকের কঠিন জীবনের বাস্তবতা এবং নিজের প্রতিভার মূল্য সম্পর্কে তপনের শিশু মন থেকে প্রাপ্ত এক প্রাপ্তবয়স্ক উপলব্ধি



আপনার প্রশ্নের মূল বিষয়বস্তু হলো আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর, যা ২০২৬ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য উপযোগী।

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পটি নতুন শিক্ষাক্রমের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, তাই প্রশ্নের ধরনও কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। নিচে গতানুগতিক ও নতুন ধারার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করা হলো:

📚 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

১. সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (Short Answer Questions)

প্রশ্নউত্তর
১. জ্ঞানচক্ষু কথাটির অর্থ কী?জ্ঞানচক্ষু কথাটির অর্থ হলো জ্ঞানের উন্মেষ বা সঠিক উপলব্ধি। গল্পে, তপন যখন বুঝতে পারে যে লেখালেখি ব্যাপারটা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য কতখানি কঠিন এবং তার লেখা ছাপার অক্ষরে দেখেই লেখক হওয়া যায় না, তখনই তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়।
২. তপনের লেখা গল্পটি কোন পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল?তপনের লেখা গল্পটি তার ছোট মেসোর বন্ধু 'সন্ধ্যাতারা' নামক একটি অবাস্তব/কল্পনার (কাল্পনিক) পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল।
৩. তপন লেখা গল্পটির নাম কী ছিল?তপন লেখা গল্পটির নাম ছিল 'প্রথম দিন'
৪. মেসোর কারেকশন করার কথা শুনে তপনের কী মনে হয়েছিল?মেসোর কারেকশন করার কথা শুনে তপনের মনে হয়েছিল, "গল্পের কোনো ভুল হয়নি।" সে মনে করেছিল ছোট মেসো তার গল্পটিকে শুধুমাত্র সহজ সরল ভাষায় প্রকাশ করে দিয়েছেন।
৫. তপনের নতুন মেসোমশাইয়ের পেশা কী ছিল?তপনের নতুন মেসোমশাই ছিলেন একজন লেখক এবং পেশায় তিনি ছিলেন একজন কলেজের অধ্যাপক

২. দীর্ঘ উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (Descriptive/Analytical Questions)

১. "কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।"— কোন কথা শুনে, কেন তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল?

উত্তর:

  • কোন কথা শুনে: তপনের নতুন মেসোমশাই একজন লেখক। এই কথাটি শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গিয়েছিল।

  • কারণ: তপনের ধারণা ছিল লেখক মানেই আকাশের কোনো দেবতা বা অন্য জগতের মানুষ। তার চোখে লেখক মানে বইয়ের ছাপা অক্ষরের এক বিশাল রহস্যময় ব্যক্তিত্ব। সেই লেখক তার বাড়িতে, একেবারে তার সামনে বসে আছেন এবং সাধারণ মানুষের মতোই জীবন যাপন করেন, এই ব্যাপারটা তার কল্পনার বাইরে ছিল। এই অবিশ্বাস্য আবিষ্কার তার শিশু মনে চরম বিস্ময় সৃষ্টি করে, তাই তার চোখ মার্বেলের মতো বড় হয়ে গিয়েছিল।

২. "রত্নের মূল্য জহুরীর কাছেই।"— মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

  • মন্তব্যের উৎস: তপনের ছোট মাসি এই কথাটি বলেছিলেন যখন তিনি তপনের লেখা গল্পটি মেসোমশাইকে দেখিয়ে ছাপানোর প্রস্তাব করেন।

  • তাৎপর্য: এখানে 'রত্ন' বলতে বোঝানো হয়েছে তপনের লেখা গল্প বা তার ভেতরের প্রতিভাকে, আর 'জহুরী' বলতে বোঝানো হয়েছে লেখক মেসোমশাইকে, যিনি সাহিত্যের মূল্য বোঝেন। মাসি বোঝাতে চেয়েছিলেন, একজন লেখকের কাছেই অন্য একটি লেখার মূল্য সবচেয়ে বেশি। এই মন্তব্যের মাধ্যমে মাসি একদিকে যেমন তপনের প্রতিভার কদর করেছিলেন, তেমনি মেসোর ক্ষমতা ও অবস্থানকে মহিমান্বিত করেছিলেন।

৩. "এর থেকে দুঃখের কিছু নেই।"— কীসের থেকে দুঃখের কিছু নেই? উক্তিটির মাধ্যমে তপনের কোন অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তর:

  • কীসের থেকে দুঃখের কিছু নেই: তপনের নিজের লেখা গল্প 'প্রথম দিন' যখন 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপা হয়, তখন সে দেখে যে তার মেসোমশাই সেটি আগাগোড়া শুধরে, পাল্টে এবং প্রায় নতুন করে ছাপিয়েছেন। অর্থাৎ, গল্পটি লেখকের নামে ছাপা হলেও তা তপনের মৌলিক লেখা ছিল না। এই মিথ্যা পরিচয়ের দুঃখের থেকে আর কিছু কষ্টের নেই।

  • অনুভূতির প্রকাশ: এই উক্তিটির মাধ্যমে তপনের গভীর অভিমান, আত্মমর্যাদার হানি এবং চরম হতাশার অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে। তার কাছে গল্প ছাপা হওয়ার আনন্দ ফিকে হয়ে গিয়েছিল যখন সে আবিষ্কার করে যে তার নিজের কৃতিত্ব বলে আর কিছু নেই। তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় এবং সে বুঝতে পারে তার লেখাটা আসলে করুণার পাত্র হয়েছিল। এই অভিজ্ঞতা তার ভেতরের শিশুসুলভ অহংকারকে চূর্ণ করে এবং সে শপথ নেয় যে কোনোদিন নিজের কাঁচা লেখা ছাপতে দেবে না, বরং নিজের লেখাটিকেই ছাপার অক্ষরে দেখতে চাইবে।


৩. রচনাধর্মী/মূল্যায়ন ভিত্তিক প্রশ্ন (Value-Based Question)

১. 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষু কীভাবে উন্মোচিত হয়েছিল— বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন হলো গল্পের কেন্দ্রীয় থিম। এই উন্মোচন একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ঘটেছিল, যা তার ভুল ধারণা ভেঙে দেয়।

  1. প্রথম পর্ব (বিস্ময়): তপনের প্রথম জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হয় যখন সে জানতে পারে তার মেসোমশাই একজন লেখক। লেখক মানে সাধারণ মানুষ— এই সত্যটি আবিষ্কার করে সে প্রথমে বিস্মিত হয় এবং উৎসাহ পায়।

  2. দ্বিতীয় পর্ব (আশা): সে নিজে গল্প লিখে ফেলে এবং তার মাসি ও মেসোমশাইয়ের মাধ্যমে সেটি পত্রিকায় ছাপার সুযোগ পায়। তার মনে চরম আনন্দ ও গর্বের সৃষ্টি হয়।

  3. চূড়ান্ত পর্ব (তিক্ততা ও উপলব্ধি): যখন ছাপা হওয়া 'প্রথম দিন' গল্পটি সে পড়ে, তখন দেখে যে মেসোমশাই পুরো গল্পটি 'কারেকশন'-এর নামে বদলে দিয়েছেন। তার নিজের লেখা বলে সেখানে কিছুই অবশিষ্ট নেই। এই আবিষ্কার তার কাছে মিথ্যা পরিচয়ের যন্ত্রণা নিয়ে আসে। সে বুঝতে পারে, তার লেখাটা সহানুভূতি বা করুণার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তার প্রতিভার স্বীকৃতি হিসেবে নয়।

  4. জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন: এই দুঃখজনক মুহূর্তেই তার আসল জ্ঞানচক্ষু বা সঠিক উপলব্ধি হয়। সে বুঝতে পারে, লেখক হওয়ার পথ সহজ নয়। খ্যাতি বা প্রশংসা পাওয়ার চেয়ে মৌলিকতা ও স্বকীয়তার গুরুত্ব অনেক বেশি। এই উপলব্ধির পর সে প্রতিজ্ঞা করে, যে কোনো দিন নিজের কাঁচা লেখা ছাপতে দেবে না।

সুতরাং, এই গল্পে জ্ঞানচক্ষু হলো লেখকের কঠিন জীবনের বাস্তবতা এবং নিজের প্রতিভার মূল্য সম্পর্কে তপনের শিশু মন থেকে প্রাপ্ত এক প্রাপ্তবয়স্ক উপলব্ধি

আপনার প্রশ্নের মূল বিষয়বস্তু হলো আশাপূর্ণা দেবী রচিত 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর, যা ২০২৬ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য উপযোগী।

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পটি নতুন শিক্ষাক্রমের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, তাই প্রশ্নের ধরনও কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে। নিচে গতানুগতিক ও নতুন ধারার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করা হলো:

📚 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর

১. সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (Short Answer Questions)

প্রশ্নউত্তর
১. জ্ঞানচক্ষু কথাটির অর্থ কী?জ্ঞানচক্ষু কথাটির অর্থ হলো জ্ঞানের উন্মেষ বা সঠিক উপলব্ধি। গল্পে, তপন যখন বুঝতে পারে যে লেখালেখি ব্যাপারটা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য কতখানি কঠিন এবং তার লেখা ছাপার অক্ষরে দেখেই লেখক হওয়া যায় না, তখনই তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়।
২. তপনের লেখা গল্পটি কোন পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল?তপনের লেখা গল্পটি তার ছোট মেসোর বন্ধু 'সন্ধ্যাতারা' নামক একটি অবাস্তব/কল্পনার (কাল্পনিক) পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল।
৩. তপন লেখা গল্পটির নাম কী ছিল?তপন লেখা গল্পটির নাম ছিল 'প্রথম দিন'
৪. মেসোর কারেকশন করার কথা শুনে তপনের কী মনে হয়েছিল?মেসোর কারেকশন করার কথা শুনে তপনের মনে হয়েছিল, "গল্পের কোনো ভুল হয়নি।" সে মনে করেছিল ছোট মেসো তার গল্পটিকে শুধুমাত্র সহজ সরল ভাষায় প্রকাশ করে দিয়েছেন।
৫. তপনের নতুন মেসোমশাইয়ের পেশা কী ছিল?তপনের নতুন মেসোমশাই ছিলেন একজন লেখক এবং পেশায় তিনি ছিলেন একজন কলেজের অধ্যাপক

২. দীর্ঘ উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (Descriptive/Analytical Questions)

১. "কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।"— কোন কথা শুনে, কেন তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল?

উত্তর:

  • কোন কথা শুনে: তপনের নতুন মেসোমশাই একজন লেখক। এই কথাটি শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গিয়েছিল।

  • কারণ: তপনের ধারণা ছিল লেখক মানেই আকাশের কোনো দেবতা বা অন্য জগতের মানুষ। তার চোখে লেখক মানে বইয়ের ছাপা অক্ষরের এক বিশাল রহস্যময় ব্যক্তিত্ব। সেই লেখক তার বাড়িতে, একেবারে তার সামনে বসে আছেন এবং সাধারণ মানুষের মতোই জীবন যাপন করেন, এই ব্যাপারটা তার কল্পনার বাইরে ছিল। এই অবিশ্বাস্য আবিষ্কার তার শিশু মনে চরম বিস্ময় সৃষ্টি করে, তাই তার চোখ মার্বেলের মতো বড় হয়ে গিয়েছিল।

২. "রত্নের মূল্য জহুরীর কাছেই।"— মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

  • মন্তব্যের উৎস: তপনের ছোট মাসি এই কথাটি বলেছিলেন যখন তিনি তপনের লেখা গল্পটি মেসোমশাইকে দেখিয়ে ছাপানোর প্রস্তাব করেন।

  • তাৎপর্য: এখানে 'রত্ন' বলতে বোঝানো হয়েছে তপনের লেখা গল্প বা তার ভেতরের প্রতিভাকে, আর 'জহুরী' বলতে বোঝানো হয়েছে লেখক মেসোমশাইকে, যিনি সাহিত্যের মূল্য বোঝেন। মাসি বোঝাতে চেয়েছিলেন, একজন লেখকের কাছেই অন্য একটি লেখার মূল্য সবচেয়ে বেশি। এই মন্তব্যের মাধ্যমে মাসি একদিকে যেমন তপনের প্রতিভার কদর করেছিলেন, তেমনি মেসোর ক্ষমতা ও অবস্থানকে মহিমান্বিত করেছিলেন।

৩. "এর থেকে দুঃখের কিছু নেই।"— কীসের থেকে দুঃখের কিছু নেই? উক্তিটির মাধ্যমে তপনের কোন অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তর:

  • কীসের থেকে দুঃখের কিছু নেই: তপনের নিজের লেখা গল্প 'প্রথম দিন' যখন 'সন্ধ্যাতারা' পত্রিকায় ছাপা হয়, তখন সে দেখে যে তার মেসোমশাই সেটি আগাগোড়া শুধরে, পাল্টে এবং প্রায় নতুন করে ছাপিয়েছেন। অর্থাৎ, গল্পটি লেখকের নামে ছাপা হলেও তা তপনের মৌলিক লেখা ছিল না। এই মিথ্যা পরিচয়ের দুঃখের থেকে আর কিছু কষ্টের নেই।

  • অনুভূতির প্রকাশ: এই উক্তিটির মাধ্যমে তপনের গভীর অভিমান, আত্মমর্যাদার হানি এবং চরম হতাশার অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে। তার কাছে গল্প ছাপা হওয়ার আনন্দ ফিকে হয়ে গিয়েছিল যখন সে আবিষ্কার করে যে তার নিজের কৃতিত্ব বলে আর কিছু নেই। তার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় এবং সে বুঝতে পারে তার লেখাটা আসলে করুণার পাত্র হয়েছিল। এই অভিজ্ঞতা তার ভেতরের শিশুসুলভ অহংকারকে চূর্ণ করে এবং সে শপথ নেয় যে কোনোদিন নিজের কাঁচা লেখা ছাপতে দেবে না, বরং নিজের লেখাটিকেই ছাপার অক্ষরে দেখতে চাইবে।


৩. রচনাধর্মী/মূল্যায়ন ভিত্তিক প্রশ্ন (Value-Based Question)

১. 'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষু কীভাবে উন্মোচিত হয়েছিল— বিশ্লেষণ করো।

উত্তর:

'জ্ঞানচক্ষু' গল্পে তপনের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন হলো গল্পের কেন্দ্রীয় থিম। এই উন্মোচন একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ঘটেছিল, যা তার ভুল ধারণা ভেঙে দেয়।

  1. প্রথম পর্ব (বিস্ময়): তপনের প্রথম জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হয় যখন সে জানতে পারে তার মেসোমশাই একজন লেখক। লেখক মানে সাধারণ মানুষ— এই সত্যটি আবিষ্কার করে সে প্রথমে বিস্মিত হয় এবং উৎসাহ পায়।

  2. দ্বিতীয় পর্ব (আশা): সে নিজে গল্প লিখে ফেলে এবং তার মাসি ও মেসোমশাইয়ের মাধ্যমে সেটি পত্রিকায় ছাপার সুযোগ পায়। তার মনে চরম আনন্দ ও গর্বের সৃষ্টি হয়।

  3. চূড়ান্ত পর্ব (তিক্ততা ও উপলব্ধি): যখন ছাপা হওয়া 'প্রথম দিন' গল্পটি সে পড়ে, তখন দেখে যে মেসোমশাই পুরো গল্পটি 'কারেকশন'-এর নামে বদলে দিয়েছেন। তার নিজের লেখা বলে সেখানে কিছুই অবশিষ্ট নেই। এই আবিষ্কার তার কাছে মিথ্যা পরিচয়ের যন্ত্রণা নিয়ে আসে। সে বুঝতে পারে, তার লেখাটা সহানুভূতি বা করুণার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তার প্রতিভার স্বীকৃতি হিসেবে নয়।

  4. জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন: এই দুঃখজনক মুহূর্তেই তার আসল জ্ঞানচক্ষু বা সঠিক উপলব্ধি হয়। সে বুঝতে পারে, লেখক হওয়ার পথ সহজ নয়। খ্যাতি বা প্রশংসা পাওয়ার চেয়ে মৌলিকতা ও স্বকীয়তার গুরুত্ব অনেক বেশি। এই উপলব্ধির পর সে প্রতিজ্ঞা করে, যে কোনো দিন নিজের কাঁচা লেখা ছাপতে দেবে না।

সুতরাং, এই গল্পে জ্ঞানচক্ষু হলো লেখকের কঠিন জীবনের বাস্তবতা এবং নিজের প্রতিভার মূল্য সম্পর্কে তপনের শিশু মন থেকে প্রাপ্ত এক প্রাপ্তবয়স্ক উপলব্ধি

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন