মেয়েদের থুতনিতে দাড়ি

 মেয়েদের থুতনিতে দাড়ি

মেয়েদের থুতনিতে বা মুখে দাড়ি, লোম বা চুল গজানো অস্বাভাবিক কিছু নয়। এর কারণ হতে পারে হরমোনজনিত বা জেনেটিক। এই সমস্যাটিকে সাধারণত হিরসুটিজম (Hirsutism) বলা হয়।

হিরসুটিজম কেন হয়?

হিরসুটিজম সাধারণত পুরুষের মতো ঘন, কালো বা মোটা চুল মেয়েদের শরীরে দেখা গেলে বলা হয়। এটি সাধারণত মুখে, বুকে, পিঠে বা পেটে হতে পারে। এর প্রধান কারণগুলো হলো:

১. অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের আধিক্য (Excess Androgen):

অ্যান্ড্রোজেন হলো পুরুষ হরমোন, যা নারীদের শরীরেও অল্প পরিমাণে থাকে। যখন কোনো কারণে এই হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়, তখন থুতনিতে বা মুখের অন্যান্য অংশে লোম বা দাড়ি গজাতে পারে।

২. পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS):

এটি একটি হরমোনজনিত সমস্যা যা মহিলাদের মধ্যে খুব সাধারণ। PCOS-এর কারণে ডিম্বাশয়ে সিস্ট তৈরি হয় এবং অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে ওজন বৃদ্ধি, অনিয়মিত মাসিক এবং মুখে অতিরিক্ত লোম দেখা দিতে পারে।

৩. বংশগত কারণ (Genetics):

অনেক সময় পরিবারে কারও হিরসুটিজম থাকলে আপনারও এই সমস্যা হতে পারে। এটি জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে এবং স্বাভাবিক বলে ধরা হয়।

৪. মেনোপজ (Menopause):

মেনোপজের সময় মহিলাদের শরীরে হরমোনের পরিবর্তন হয়, বিশেষ করে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমে যায়। এই কারণেও কিছু মহিলার থুতনিতে লোম বা দাড়ি দেখা দিতে পারে।

৫. কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ যেমন স্টেরয়েড, টেস্টোস্টেরন বা কিছু উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সেবনের ফলে হিরসুটিজম হতে পারে।

৬. অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির সমস্যা:

বিরল কিছু ক্ষেত্রে অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির টিউমার বা সমস্যার কারণে অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা হিরসুটিজমের কারণ হতে পারে।


কী করবেন?

যদি আপনার থুতনিতে বা মুখে অতিরিক্ত লোম থাকে এবং আপনি এর কারণ বা সমাধান জানতে চান, তাহলে একজন চিকিৎসকের (বিশেষ করে একজন এন্ডোক্রিনোলজিস্ট বা গাইনোকোলজিস্ট) সাথে পরামর্শ করা জরুরি। তিনি হরমোন পরীক্ষা করে সঠিক কারণ নির্ণয় করতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা যেমন ওষুধ বা লেজার ট্রিটমেন্টের পরামর্শ দিতে পারেন।

বাড়িতে কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করে এই লোম অপসারণ করতে পারেন, যেমন:

  • ওয়াক্সিং (Waxing)

  • থ্রেডিং (Threading)

  • টুইজিং (Tweezing)

  • লেজার হেয়ার রিমুভাল (Laser Hair Removal)

তবে, যেকোনো স্থায়ী সমাধানের জন্য একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন