মেয়েদের ওযুর নিয়ম
মেয়েদের জন্য ওযু করার নিয়ম ছেলেদের ওযু করার নিয়মের মতোই। ইসলামে নারী বা পুরুষের জন্য আলাদা কোনো ওযুর নিয়ম নেই। তবে কিছু ছোট ছোট বিষয় আছে যা মেয়েদের জন্য প্রযোজ্য হতে পারে। এখানে ওযু করার সঠিক পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:
ওযুর ফরজ ও সুন্নত
ওযুর কিছু ফরজ ও সুন্নত রয়েছে। ওযুর ফরজগুলো হলো— মুখ ধোয়া, কনুই পর্যন্ত দুই হাত ধোয়া, মাথার এক-চতুর্থাংশ মাসেহ করা, এবং পায়ের টাকনুসহ ধোয়া। এই ফরজগুলো বাদ গেলে ওযু শুদ্ধ হবে না। এর পাশাপাশি সুন্নতগুলো পালন করলে ওযুর পূর্ণাঙ্গ সওয়াব পাওয়া যায়।
ওযুর নিয়ম
নিয়ত ও বিসমিল্লাহ: প্রথমে মনে মনে ওযুর নিয়ত করুন যে আপনি পবিত্রতা অর্জনের জন্য ওযু করছেন। এরপর 'বিসমিল্লাহ' বলে ওযু শুরু করুন।
হাত ধোয়া: কব্জি পর্যন্ত দুই হাত তিনবার ভালোভাবে ধুতে হবে। যদি হাতে কোনো আংটি, চুড়ি বা ঘড়ি থাকে, তবে সেগুলোর নিচে পানি পৌঁছানো নিশ্চিত করুন। আঙুলগুলো ভালোভাবে খেলাল (আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে পানি দিয়ে ঘষা) করুন।
কুলি করা: ডান হাতে পানি নিয়ে তিনবার কুলি করুন। রোজা না থাকলে গড়গড়া করা মুস্তাহাব।
নাক পরিষ্কার করা: ডান হাতে পানি নিয়ে তিনবার নাকে পানি দিন এবং বাম হাতের কড়ে আঙুল দিয়ে নাক পরিষ্কার করুন। রোজা থাকলে সাবধানে পানি দিন যাতে তা গলার নিচে চলে না যায়।
মুখ ধোয়া: চুলের গোড়া থেকে থুতনির নিচ পর্যন্ত এবং এক কানের লতি থেকে অন্য কানের লতি পর্যন্ত মুখমণ্ডল তিনবার ধৌত করুন।
কনুই পর্যন্ত হাত ধোয়া: প্রথমে ডান হাত আঙুলের মাথা থেকে কনুই পর্যন্ত তিনবার ধৌত করুন। এরপর একইভাবে বাম হাত তিনবার ধৌত করুন।
মাথা মাসেহ করা: নতুন পানি দিয়ে দুই হাত ভিজিয়ে নিন। এরপর মাথার সামনের দিক থেকে পেছনের দিক পর্যন্ত মাসেহ করুন। মেয়েদের ক্ষেত্রে চুল বাঁধা থাকলে পুরো চুল মাসেহ করার দরকার নেই, শুধু মাথার সামনের অংশ মাসেহ করলেই যথেষ্ট।
কান মাসেহ করা: যে পানি দিয়ে মাথা মাসেহ করেছেন, সেই ভেজা হাত দিয়েই দুই কান মাসেহ করুন। কানের ভেতরের অংশে শাহাদাত আঙুল (তর্জনী) এবং বাইরের অংশে বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে মাসেহ করুন।
পা ধোয়া: প্রথমে ডান পায়ের আঙুলের মাথা থেকে গোড়ালি পর্যন্ত ভালোভাবে তিনবার ধৌত করুন। এরপর একইভাবে বাম পা তিনবার ধৌত করুন। পায়ের আঙুলগুলো খেলাল করা মুস্তাহাব।
অতিরিক্ত কিছু বিষয়
গহনা ও অলংকার: যদি হাতে চুড়ি, আংটি বা অন্য কোনো অলংকার থাকে, তাহলে সেগুলোর নিচে যেন পানি পৌঁছায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। প্রয়োজন হলে গহনাগুলো একটু নাড়িয়ে নেবেন।
নেলপলিশ ও মেহেদী: যদি নখে নেইলপলিশ থাকে, তাহলে তা তুলে ফেলতে হবে। কারণ নেইলপলিশ পানিকে নখের মধ্যে পৌঁছাতে বাধা দেয়। তবে মেহেদী লাগানো থাকলে ওযু হয়ে যায়।
টিপ: কপালে টিপ পরা থাকলে ওযু করার আগে তা তুলে ফেলতে হবে।
এই নিয়মগুলো মেনে চললে আপনার ওযু সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে। আশা করি এই তথ্যগুলো আপনার কাজে আসবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন