রসগোল্লার আবিষ্কারক কে
রসগোল্লার আবিষ্কারক কে, তা নিয়ে দুটি প্রধান মত প্রচলিত আছে। একটি মত অনুযায়ী, এটি ওড়িশার পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকে উদ্ভূত হয়েছে। আরেকটি মত অনুযায়ী, কলকাতার নবীন চন্দ্র দাস এর আধুনিক রূপ ও জনপ্রিয়তা দেন।
১. ওড়িশার দাবি:
ওড়িশার লোকেরা বিশ্বাস করে, রসগোল্লা পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে বহুকাল ধরে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়। এটি তাদের একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি, যা 'ক্ষীর মোহন' নামে পরিচিত ছিল। তাদের মতে, এটি বহু শতাব্দী পুরোনো।
২. নবীন চন্দ্র দাসের অবদান:
কলকাতার নবীন চন্দ্র দাসকে আধুনিক রসগোল্লার আবিষ্কারক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রচলিত কাহিনী অনুযায়ী, ১৮৬৮ সালে তিনি ছানা এবং চিনির মিশ্রণকে একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় তৈরি করে আজকের রসগোল্লার জন্ম দেন। তার তৈরি রসগোল্লা ছিল নরম, স্পঞ্জি এবং রসালো, যা আগেকার কঠিন বা অন্য ধরনের মিষ্টির চেয়ে ভিন্ন ছিল। তার এই আবিষ্কার দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং তাকে "রসগোল্লার কলম্বাস" হিসেবে পরিচিতি এনে দেয়।
জিআই ট্যাগ বিতর্ক:
এই আবিষ্কার নিয়ে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে বহু বছর ধরে আইনি বিতর্ক চলে আসছিল। শেষ পর্যন্ত, ২০১৭ সালে পশ্চিমবঙ্গকে "বাংলার রসগোল্লা" (Banglar Rosogolla) এর জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই ট্যাগ (GI Tag) প্রদান করা হয়। এই ট্যাগের মূল কারণ ছিল, নবীন চন্দ্র দাসের আবিষ্কৃত স্পঞ্জি ও রসালো রসগোল্লা বাংলার স্বতন্ত্র সৃষ্টি। তবে, ২০১৯ সালে ওড়িশাও তাদের ঐতিহ্যবাহী 'ওড়িশার রসগোল্লা' (Odisha Rasagola) এর জন্য একটি পৃথক জিআই ট্যাগ পায়।
সুতরাং, সংক্ষেপে বলা যায়—
ঐতিহ্যগতভাবে: রসগোল্লা বা তার আদি রূপ ওড়িশায় প্রচলিত ছিল।
আধুনিক ও স্পঞ্জি রূপ: নবীন চন্দ্র দাস কলকাতার এই আধুনিক রসগোল্লার বাণিজ্যিক রূপ দেন এবং জনপ্রিয় করেন।
জিআই ট্যাগ অনুযায়ী: পশ্চিমবঙ্গকে "বাংলার রসগোল্লা" এবং ওড়িশাকে "ওড়িশার রসগোল্লা"-এর জন্য পৃথক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন