শূন্য আবিষ্কারক কে

শূন্য আবিষ্কারক কে

শূন্যের ধারণাটি বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতায় ভিন্ন ভিন্ন রূপে বিদ্যমান ছিল, তবে ভারতীয় গণিতজ্ঞরাই শূন্যকে একটি স্বতন্ত্র সংখ্যা হিসেবে আবিষ্কার ও প্রতিষ্ঠা করেন।

এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব দেওয়া হয়:

  • ব্রহ্মগুপ্ত (Brahmagupta): তিনি ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে তাঁর গ্রন্থ "ব্রহ্মস্ফুটসিদ্ধান্ত"-তে শূন্যকে একটি পূর্ণাঙ্গ সংখ্যা হিসেবে ব্যাখ্যা করেন এবং এর যোগ, বিয়োগ, এবং গুণের নিয়মাবলী প্রতিষ্ঠা করেন।

  • আর্যভট্ট (Aryabhata): যদিও ব্রহ্মগুপ্তের মতো সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেননি, ধারণা করা হয় আর্যভট্টই প্রথম ভারতীয় গণিতবিদ যিনি ৫০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে শূন্যের একটি প্রাথমিক ধারণা দেন এবং দশমিক স্থানমানের জন্য এটি ব্যবহার করেন।

ব্যাবিলনীয় এবং মায়া সভ্যতায়ও শূন্যের মতো প্রতীক ব্যবহার করা হতো, কিন্তু সেগুলোর ব্যবহার ছিল মূলত স্থান-সংরক্ষণকারী (placeholder) হিসেবে। ভারতীয় গণিতবিদদের এই আবিষ্কারের ফলেই আধুনিক সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি স্থাপিত হয়।



শূন্যের আবিষ্কার নিয়ে একটি সুনির্দিষ্ট উত্তর দেওয়া কঠিন, কারণ এর ইতিহাস বেশ জটিল। তবে, বেশিরভাগ ইতিহাসবিদ এবং গণিতজ্ঞের মতে ভারতীয় উপমহাদেশেই শূন্যের ধারণাটি একটি স্বতন্ত্র সংখ্যা হিসেবে পূর্ণতা লাভ করে এবং এই ধারণার বিকাশে প্রধান অবদান ছিল ভারতীয় গণিতবিদদের।

শূন্যের আবিষ্কারের পেছনে প্রধানত দু'জন ভারতীয় গণিতবিদের নাম উঠে আসে:

১. আর্যভট্ট (৪৭৫-৫৫০ খ্রিস্টাব্দ): তাকে প্রায়শই শূন্যের প্রথম ধারণার প্রবক্তা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যদিও তিনি শূন্যকে সরাসরি একটি সংখ্যা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেননি, তবে তার কাজে শূন্যের স্থান-মূল্য (place value) ধারণাটি দেখা যায়, যা দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির বিকাশে অপরিহার্য ছিল।

২. ব্রহ্মগুপ্ত (৫৯৮-৬৬৫ খ্রিস্টাব্দ): ব্রহ্মগুপ্তকে শূন্যের প্রকৃত আবিষ্কারক হিসেবে সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব দেওয়া হয়। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ 'ব্রহ্মস্ফুটসিদ্ধান্ত'-তে তিনি প্রথম শূন্যকে একটি সংখ্যা হিসেবে ব্যাখ্যা করেন এবং এর গাণিতিক নিয়মাবলী (যেমন: যোগ, বিয়োগ, গুণ) বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন। তিনিই প্রথম দেখান যে, কোনো সংখ্যা থেকে সেই সংখ্যাটি বিয়োগ করলে শূন্য হয় (

)।

ভারতীয় গণিতজ্ঞদের এই আবিষ্কার পরবর্তীকালে আরব বিশ্বের মাধ্যমে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে এবং আধুনিক গণিত ও বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন