সময়ের আবিষ্কারক কে
সময় একটি বিমূর্ত ধারণা, যা কোনো একক ব্যক্তি দ্বারা আবিষ্কৃত হয়নি। এটি মানব সভ্যতার বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে গড়ে ওঠা একটি ধারণা। বিভিন্ন সভ্যতা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সময়কে পরিমাপ ও সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছে।
তবে, আধুনিক সময়ে আমরা যে ঘড়ি ও সময়ের হিসাব ব্যবহার করি, তার পেছনে রয়েছে বহু বিজ্ঞানী, দার্শনিক ও গণিতবিদের অবদান।
প্রাচীন সভ্যতার অবদান:
ব্যাবিলনীয় এবং মিশরীয় সভ্যতা: এই সভ্যতাগুলো প্রথম সময়কে পরিমাপ করার জন্য সূর্যঘড়ি এবং জলঘড়ি ব্যবহার করত। তারা দিনকে ২৪টি ভাগে ভাগ করেছিল এবং সপ্তাহ, মাস ও বছরের ধারণা তৈরি করেছিল।
গ্রিক দার্শনিকগণ: দার্শনিক অ্যারিস্টটল সময়কে মহাবিশ্বের পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি ধারণা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছিলেন।
আধুনিক ঘড়ির বিবর্তন:
গ্যালিলিও গ্যালিলি (Galileo Galilei): ১৬শ শতকে গ্যালিলিও পেন্ডুলামের দোলন ব্যবহার করে সময় পরিমাপের ধারণার সূত্রপাত করেন, যা আধুনিক ঘড়ির ভিত্তি স্থাপন করে।
ক্রিস্টিয়ান হাইগেন্স (Christiaan Huygens): ১৬৫৬ সালে তিনি প্রথম পেন্ডুলাম ঘড়ি তৈরি করেন, যা সময়ের নির্ভুল পরিমাপকে সম্ভব করে তোলে।
সময় ও স্থান সংক্রান্ত আধুনিক ধারণা:
স্যার আইজ্যাক নিউটন (Sir Isaac Newton): তিনি সময়কে একটি পরম বা নিরঙ্কুশ ধারণা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন। তাঁর মতে, সময় মহাবিশ্বের সর্বত্র একই গতিতে প্রবাহিত হয়।
আলবার্ট আইনস্টাইন (Albert Einstein): ২০শ শতকে আইনস্টাইন তাঁর আপেক্ষিকতার তত্ত্বের মাধ্যমে নিউটনের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানান। তিনি প্রমাণ করেন যে সময় একটি আপেক্ষিক ধারণা এবং এটি পর্যবেক্ষকের গতি ও মাধ্যাকর্ষণের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।
সুতরাং, সময় কোনো একক ব্যক্তি দ্বারা আবিষ্কৃত হয়নি, বরং এটি মানব ইতিহাসের একটি সম্মিলিত আবিষ্কার। বিভিন্ন সভ্যতা ও বিজ্ঞানী তাঁদের জ্ঞান ও গবেষণার মাধ্যমে এর ধারণা ও পরিমাপ পদ্ধতিকে বিকশিত করেছেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন