সংখ্যার আবিষ্কারক কে
সংখ্যা আবিষ্কারের কোনো একক ব্যক্তি নেই, কারণ এটি মানব সভ্যতার বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা একটি ধারণা। আদিম মানুষ যখন কোনো কিছুর হিসাব রাখার প্রয়োজন অনুভব করেছিল, তখন থেকেই সংখ্যার ধারণার জন্ম হয়।
প্রাচীনকালে মানুষ বিভিন্ন প্রাকৃতিক বস্তু যেমন, পাথর, নুড়ি, গাছের ডাল বা শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ (যেমন আঙুল) ব্যবহার করে গণনা করত। পরবর্তীতে, তারা এক, দুই, তিন... এভাবে সংখ্যার প্রতীক তৈরি করতে শেখে।
তবে, আধুনিক গণিতে আমরা যে দশমিক পদ্ধতি এবং শূন্যের ব্যবহার করি, তার প্রধান কৃতিত্ব ভারতীয় গণিতবিদদের। খ্রিস্টীয় ৫ম থেকে ৭ম শতকে আর্যভট্ট এবং ব্রহ্মগুপ্তের মতো পণ্ডিতরা শূন্যকে একটি স্বতন্ত্র সংখ্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর গাণিতিক নিয়মাবলী প্রণয়ন করেন। এই ধারণাটি আরব বণিকদের মাধ্যমে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে এবং আধুনিক গণিত ও বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করে।
সুতরাং, যদিও সংখ্যার ধারণা বিভিন্ন সভ্যতায় বিচ্ছিন্নভাবে বিকশিত হয়েছে, এর আধুনিক রূপের ভিত্তি স্থাপন করেন ভারতীয় গণিতবিদগণ।
সংখ্যা আবিষ্কারের কোনো একক ব্যক্তি নেই, কারণ এটি মানব সভ্যতার বিবর্তনের একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আদিম মানুষ যখন কোনো কিছু গণনা করার প্রয়োজন অনুভব করেছিল, তখন থেকেই সংখ্যার ধারণাটির সূচনা হয়।
গণনার প্রাথমিক পদ্ধতি
পাথরের ব্যবহার: প্রাচীন মানুষ তাদের শিকার করা পশুর সংখ্যা বা গোত্রের মানুষের সংখ্যা মনে রাখার জন্য পাথর ব্যবহার করত।
দাগ কাটা: গুহার দেয়ালে বা গাছের গুঁড়িতে দাগ কেটেও গণনা করা হতো।
হাতের আঙুল: হাতের আঙুল ব্যবহার করে গণনা করা সবচেয়ে সহজ ও প্রাকৃতিক পদ্ধতি।
লিখিত সংখ্যার জন্ম
সুমেরীয় সভ্যতা: প্রায় ৪,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মেসোপটেমিয়ার সুমেরীয়রা প্রথম লেখার পদ্ধতি, কিউনিফর্ম লিপির মাধ্যমে গণনার জন্য প্রতীক ব্যবহার করা শুরু করে।
মিশরীয় সভ্যতা: মিশরীয়রা তাদের হায়ারোগ্লিফিক লিপিতে সংখ্যার জন্য বিভিন্ন প্রতীক ব্যবহার করত। যেমন, তারা দশ, শত এবং হাজারের জন্য আলাদা প্রতীক ব্যবহার করত।
শূন্যের আবিষ্কার
ভারতীয় গণিতবিদ: ভারতীয় গণিতবিদরা শূন্যকে (০) একটি স্বতন্ত্র সংখ্যা হিসেবে আবিষ্কার করেন এবং এটি দশমিক স্থান-মান পদ্ধতিকে (Decimal Place Value System) সম্পূর্ণ করে। খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ-৭ম শতকে ব্রহ্মগুপ্ত শূন্যের গাণিতিক নিয়মাবলী প্রণয়ন করেন, যা আধুনিক গণিত ও বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করে।
এভাবে, বিভিন্ন সভ্যতা ও গণিতবিদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সংখ্যার আজকের রূপটি গড়ে উঠেছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন