ষ লেখার নিয়ম
‘ষ’ লেখার জন্য কিছু সাধারণ নিয়ম নিচে দেওয়া হলো:
ট, ঠ, ড, ঢ, ণ - এই পাঁচটি বর্ণের আগে সবসময় ষ বসে। যেমন: কষ্ট, কাষ্ঠ, ষষ্ঠ, গোষ্ঠী, দুষ্ট, সৃষ্টি, বৃষ্টি, তুষ্ট, মিষ্ট, চেষ্টা, শ্রেষ্ঠ, নষ্ট, ওষ্ঠ, গোষ্ঠী, উষ্ণীষ, বিষণ্ণ, তৃষ্ণা, কৃষ্ণ, ইত্যাদি।
বিদেশি শব্দের ক্ষেত্রে ষ ব্যবহার হয় না। যেমন: স্টেশন, স্টোর, মাস্টার।
যদি কোনো বাংলা শব্দে 'ষ' ব্যবহার করতে হয়, তাহলে তা সংস্কৃত থেকে আসা তৎসম শব্দ হতে হবে। যেমন: ষোলো (বাংলা হলেও এর মূল 'ষোড়শ'), ষড়ঋতু, ষাঁড় ইত্যাদি।
তবে মনে রাখতে হবে, বাংলা ভাষায় 'শ', 'স' এবং 'ষ' - এই তিনটি বর্ণের উচ্চারণ প্রায় একই রকম হওয়ায় লেখার সময় অনেক ভুল হয়। তাই শব্দে 'ষ' ব্যবহার করার ক্ষেত্রে শব্দটির উৎস ও বানানবিধি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
'ষ' (মূর্ধন্য ষ) লেখার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে, যা বাংলা বানানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই নিয়মগুলো মনে রাখলে বানান ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
নিয়মগুলো হলো:
১. ট-বর্গীয় ধ্বনির আগে:
ট, ঠ, ড, ঢ – এই চারটি বর্ণের সঙ্গে যুক্তাক্ষর হিসেবে সবসময় 'ষ' ব্যবহৃত হয়। যেমন:
কষ্ ট
আষ্ টা
বৃষ্ টি
মুষ্ টি
দুষ্ ঠ
২. ঋ-কার এর পরে:
যদি কোনো শব্দের মধ্যে 'ঋ-কার' থাকে, তাহলে তার পরে প্রায়শই 'ষ' হয়। যেমন:
ঋষি
কৃষক
দৃষ্টি
বৃষ্টি
৩. কিছু বিশেষ শব্দে:
কিছু সংস্কৃত বা তৎসম শব্দে স্বভাবতই 'ষ' বসে। এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই, এগুলোকে মনে রাখতে হয়। যেমন:
পুরুষ
ভাষা
পোষণ
ভাষণ
বিষয়
ঔষধ
ষড়যন্ত্র
৪. ই-কারান্ত ও উ-কারান্ত উপসর্গের পর:
যদি কোনো উপসর্গের শেষে ই-কার (ি) অথবা উ-কার (ু) থাকে এবং তারপরে 'ক', 'খ', 'র', 'স' - এই ধরনের কিছু বর্ণ দিয়ে শব্দ শুরু হয়, তাহলে সেখানে 'ষ' বসে। যেমন:
অধি + স্কেব = অভিষেক
প্রতি + স্থান = প্রতিষ্ঠান
অনু + সঙ্গী = অনুষঙ্গী
সু + সুপ্ত = সুষুপ্ত
সংক্ষেপে মনে রাখার উপায়:
ট-বর্গীয় ধ্বনির সঙ্গে 'ষ' বসে (যেমন: কষ্ট, বৃষ্টি)।
ঋ-কারের পরে 'ষ' বসে (যেমন: কৃষক, ঋষি)।
কিছু বিশেষ শব্দে 'ষ' হয় (যেমন: ভাষা, পুরুষ)।
উপসর্গের নিয়মে 'ষ' হয় (যেমন: অভিষেক, প্রতিষ্ঠান)।
এই নিয়মগুলো আয়ত্ত করতে পারলে 'ষ' লেখার ভুল অনেকটা কমে যাবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন