স্বামী স্ত্রীর কথা না শুনলে কি হয়

 স্বামী স্ত্রীর কথা না শুনলে কি হয়


স্বামী বা স্ত্রী যেই হোক না কেন, সঙ্গী যদি অন্য সঙ্গীর কথা না শোনেন বা ক্রমাগত উপেক্ষা করেন, তবে এর ফলাফল সাধারণত অত্যন্ত নেতিবাচক হয়।

ইসলামিক ও মনস্তাত্ত্বিক—উভয় দৃষ্টিকোণ থেকে এর প্রভাব নিচে আলোচনা করা হলো:

১. ইসলামিক দৃষ্টিকোণ (কর্তব্য ও সম্মান)

ইসলামী শিক্ষায় স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই একে অপরের প্রতি সুনির্দিষ্ট কর্তব্য রয়েছে। স্বামী পরিবারের প্রধান হলেও, স্ত্রীর সম্মান, পরামর্শ ও মানসিক চাহিদাকে গুরুত্ব দেওয়া স্বামীর অন্যতম কর্তব্য।

  • সংঘাতের মূল কারণ: স্ত্রী যদি স্বামীর কোনো ইসলাম-বিরোধী বা অন্যায় কথা মানতে বা শুনতে বাধ্য না হন, তবে স্বামী যদি নেক কাজের ক্ষেত্রে বা পারিবারিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্ত্রীর কথা বা পরামর্শ উপেক্ষা করেন, তবে তা ইসলামের 'ইহসান' (উত্তম আচরণ) এবং 'মা'রুফ' (ন্যায়সঙ্গত কাজ)-এর নীতির পরিপন্থী।

  • নেতৃত্বের অপব্যবহার: স্বামী যদি কেবল নিজের সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত মনে করেন এবং স্ত্রীর ভালো পরামর্শকে অবজ্ঞা করেন, তবে তা দাম্পত্য জীবনে তাঁর নেতৃত্বের অপব্যবহার। রাসূল (সা.) তাঁর স্ত্রীদের সাথে পরামর্শ করতেন এবং তাদের আবেগ-অনুভূতির প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান দেখাতেন।

  • মানসিক অবহেলা: ক্রমাগত স্ত্রীর কথা না শোনা বা তাঁকে গুরুত্ব না দেওয়া এক প্রকার মানসিক অবহেলা, যা ইসলামে অনুমোদিত নয়। আল্লাহ তা'আলা দাম্পত্য সম্পর্ককে 'সাকান' (শান্তি) হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এই শান্তি নষ্ট হলে স্বামী গুনাহগার হতে পারেন।

২. মনস্তাত্ত্বিক ও পারিবারিক প্রভাব

স্বামী স্ত্রীর কথা না শুনলে বা তাঁকে গুরুত্ব না দিলে সংসারে নিম্নলিখিত গুরুতর সমস্যাগুলো সৃষ্টি হতে পারে:

প্রভাবের ক্ষেত্রসমস্যাব্যাখ্যা
মানসিক স্বাস্থ্যআত্মবিশ্বাসের অভাব ও হতাশা (Depression)স্ত্রী মনে করেন তাঁর কথার কোনো মূল্য নেই। ক্রমাগত উপেক্ষা তাঁকে একাকী, মূল্যহীন ও হতাশ করে তোলে।
আবেগিক দূরত্বসম্পর্কের শীতলতা (Emotional Coldness)কথা শোনা না হলে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। স্ত্রী ধীরে ধীরে স্বামীর কাছ থেকে আবেগিকভাবে দূরে সরে যান, যা দাম্পত্যের মূল ভিত্তি (স্নেহ, মমতা) নষ্ট করে দেয়।
বিদ্বেষ ও রাগক্ষোভ ও তিক্ততা (Resentment)চাপা ক্ষোভ বাড়ে। স্ত্রী স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হারাতে পারেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে তিক্ততা বা বিদ্বেষ পোষণ করতে শুরু করেন।
ঝগড়া ও কলহঅশান্তি ও তর্কগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতের মিল না হওয়ায় সংসারে ঘন ঘন ঝগড়া হয়, যা শিশুদের মানসিক বিকাশেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যাপারিবারিক বিশৃঙ্খলাস্বামী নিজের ইচ্ছেমতো ভুল সিদ্ধান্ত নিলে পরিবার আর্থিক বা অন্য কোনো সমস্যায় পড়তে পারে, কারণ স্ত্রীর সঠিক মতামত বা আশঙ্কাকে তিনি উপেক্ষা করেছেন।

৩. সমাধানের উপায়

যেহেতু দাম্পত্য সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল, তাই কথা না শোনার অভ্যাস থাকলে তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি:

  1. যোগাযোগের ধরন পরিবর্তন: স্ত্রী যেন অভিযোগের সুরে নয়, বরং নম্র ও গঠনমূলকভাবে স্বামীর কাছে তাঁর কথা বা পরামর্শ তুলে ধরেন।

  2. সক্রিয়ভাবে শোনা (Active Listening): স্বামীর উচিত যখন স্ত্রী কথা বলছেন, তখন মোবাইল বা অন্য কাজ বন্ধ রেখে মনোযোগ দিয়ে শোনা, এমনকি যদি তিনি ভিন্ন মতও পোষণ করেন।

  3. পরামর্শের মূল্য দেওয়া: গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্ত্রীর পরামর্শকে সম্মান জানানো এবং তা না মানতে চাইলে তার কারণ যুক্তি দিয়ে বোঝানো।

  4. তৃতীয় পক্ষের সহায়তা: যদি সমস্যা গুরুতর হয় এবং বারবার বোঝানোর পরেও পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তবে একজন অভিজ্ঞ বিবাহ বা পারিবারিক পরামর্শকের (Marriage Counselor) সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।


স্বামী বা স্ত্রী যেই হোক না কেন, সঙ্গী যদি অন্য সঙ্গীর কথা না শোনেন বা ক্রমাগত উপেক্ষা করেন, তবে এর ফলাফল সাধারণত অত্যন্ত নেতিবাচক হয়।

ইসলামিক ও মনস্তাত্ত্বিক—উভয় দৃষ্টিকোণ থেকে এর প্রভাব নিচে আলোচনা করা হলো:

১. ইসলামিক দৃষ্টিকোণ (কর্তব্য ও সম্মান)

ইসলামী শিক্ষায় স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই একে অপরের প্রতি সুনির্দিষ্ট কর্তব্য রয়েছে। স্বামী পরিবারের প্রধান হলেও, স্ত্রীর সম্মান, পরামর্শ ও মানসিক চাহিদাকে গুরুত্ব দেওয়া স্বামীর অন্যতম কর্তব্য।

  • সংঘাতের মূল কারণ: স্ত্রী যদি স্বামীর কোনো ইসলাম-বিরোধী বা অন্যায় কথা মানতে বা শুনতে বাধ্য না হন, তবে স্বামী যদি নেক কাজের ক্ষেত্রে বা পারিবারিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্ত্রীর কথা বা পরামর্শ উপেক্ষা করেন, তবে তা ইসলামের 'ইহসান' (উত্তম আচরণ) এবং 'মা'রুফ' (ন্যায়সঙ্গত কাজ)-এর নীতির পরিপন্থী।

  • নেতৃত্বের অপব্যবহার: স্বামী যদি কেবল নিজের সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত মনে করেন এবং স্ত্রীর ভালো পরামর্শকে অবজ্ঞা করেন, তবে তা দাম্পত্য জীবনে তাঁর নেতৃত্বের অপব্যবহার। রাসূল (সা.) তাঁর স্ত্রীদের সাথে পরামর্শ করতেন এবং তাদের আবেগ-অনুভূতির প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান দেখাতেন।

  • মানসিক অবহেলা: ক্রমাগত স্ত্রীর কথা না শোনা বা তাঁকে গুরুত্ব না দেওয়া এক প্রকার মানসিক অবহেলা, যা ইসলামে অনুমোদিত নয়। আল্লাহ তা'আলা দাম্পত্য সম্পর্ককে 'সাকান' (শান্তি) হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এই শান্তি নষ্ট হলে স্বামী গুনাহগার হতে পারেন।

২. মনস্তাত্ত্বিক ও পারিবারিক প্রভাব

স্বামী স্ত্রীর কথা না শুনলে বা তাঁকে গুরুত্ব না দিলে সংসারে নিম্নলিখিত গুরুতর সমস্যাগুলো সৃষ্টি হতে পারে:

প্রভাবের ক্ষেত্রসমস্যাব্যাখ্যা
মানসিক স্বাস্থ্যআত্মবিশ্বাসের অভাব ও হতাশা (Depression)স্ত্রী মনে করেন তাঁর কথার কোনো মূল্য নেই। ক্রমাগত উপেক্ষা তাঁকে একাকী, মূল্যহীন ও হতাশ করে তোলে।
আবেগিক দূরত্বসম্পর্কের শীতলতা (Emotional Coldness)কথা শোনা না হলে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। স্ত্রী ধীরে ধীরে স্বামীর কাছ থেকে আবেগিকভাবে দূরে সরে যান, যা দাম্পত্যের মূল ভিত্তি (স্নেহ, মমতা) নষ্ট করে দেয়।
বিদ্বেষ ও রাগক্ষোভ ও তিক্ততা (Resentment)চাপা ক্ষোভ বাড়ে। স্ত্রী স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হারাতে পারেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে তিক্ততা বা বিদ্বেষ পোষণ করতে শুরু করেন।
ঝগড়া ও কলহঅশান্তি ও তর্কগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতের মিল না হওয়ায় সংসারে ঘন ঘন ঝগড়া হয়, যা শিশুদের মানসিক বিকাশেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যাপারিবারিক বিশৃঙ্খলাস্বামী নিজের ইচ্ছেমতো ভুল সিদ্ধান্ত নিলে পরিবার আর্থিক বা অন্য কোনো সমস্যায় পড়তে পারে, কারণ স্ত্রীর সঠিক মতামত বা আশঙ্কাকে তিনি উপেক্ষা করেছেন।

৩. সমাধানের উপায়

যেহেতু দাম্পত্য সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল, তাই কথা না শোনার অভ্যাস থাকলে তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি:

  1. যোগাযোগের ধরন পরিবর্তন: স্ত্রী যেন অভিযোগের সুরে নয়, বরং নম্র ও গঠনমূলকভাবে স্বামীর কাছে তাঁর কথা বা পরামর্শ তুলে ধরেন।

  2. সক্রিয়ভাবে শোনা (Active Listening): স্বামীর উচিত যখন স্ত্রী কথা বলছেন, তখন মোবাইল বা অন্য কাজ বন্ধ রেখে মনোযোগ দিয়ে শোনা, এমনকি যদি তিনি ভিন্ন মতও পোষণ করেন।

  3. পরামর্শের মূল্য দেওয়া: গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্ত্রীর পরামর্শকে সম্মান জানানো এবং তা না মানতে চাইলে তার কারণ যুক্তি দিয়ে বোঝানো।

  4. তৃতীয় পক্ষের সহায়তা: যদি সমস্যা গুরুতর হয় এবং বারবার বোঝানোর পরেও পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তবে একজন অভিজ্ঞ বিবাহ বা পারিবারিক পরামর্শকের (Marriage Counselor) সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।


স্বামী বা স্ত্রী যেই হোক না কেন, সঙ্গী যদি অন্য সঙ্গীর কথা না শোনেন বা ক্রমাগত উপেক্ষা করেন, তবে এর ফলাফল সাধারণত অত্যন্ত নেতিবাচক হয়।

ইসলামিক ও মনস্তাত্ত্বিক—উভয় দৃষ্টিকোণ থেকে এর প্রভাব নিচে আলোচনা করা হলো:

১. ইসলামিক দৃষ্টিকোণ (কর্তব্য ও সম্মান)

ইসলামী শিক্ষায় স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই একে অপরের প্রতি সুনির্দিষ্ট কর্তব্য রয়েছে। স্বামী পরিবারের প্রধান হলেও, স্ত্রীর সম্মান, পরামর্শ ও মানসিক চাহিদাকে গুরুত্ব দেওয়া স্বামীর অন্যতম কর্তব্য।

  • সংঘাতের মূল কারণ: স্ত্রী যদি স্বামীর কোনো ইসলাম-বিরোধী বা অন্যায় কথা মানতে বা শুনতে বাধ্য না হন, তবে স্বামী যদি নেক কাজের ক্ষেত্রে বা পারিবারিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্ত্রীর কথা বা পরামর্শ উপেক্ষা করেন, তবে তা ইসলামের 'ইহসান' (উত্তম আচরণ) এবং 'মা'রুফ' (ন্যায়সঙ্গত কাজ)-এর নীতির পরিপন্থী।

  • নেতৃত্বের অপব্যবহার: স্বামী যদি কেবল নিজের সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত মনে করেন এবং স্ত্রীর ভালো পরামর্শকে অবজ্ঞা করেন, তবে তা দাম্পত্য জীবনে তাঁর নেতৃত্বের অপব্যবহার। রাসূল (সা.) তাঁর স্ত্রীদের সাথে পরামর্শ করতেন এবং তাদের আবেগ-অনুভূতির প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান দেখাতেন।

  • মানসিক অবহেলা: ক্রমাগত স্ত্রীর কথা না শোনা বা তাঁকে গুরুত্ব না দেওয়া এক প্রকার মানসিক অবহেলা, যা ইসলামে অনুমোদিত নয়। আল্লাহ তা'আলা দাম্পত্য সম্পর্ককে 'সাকান' (শান্তি) হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এই শান্তি নষ্ট হলে স্বামী গুনাহগার হতে পারেন।

২. মনস্তাত্ত্বিক ও পারিবারিক প্রভাব

স্বামী স্ত্রীর কথা না শুনলে বা তাঁকে গুরুত্ব না দিলে সংসারে নিম্নলিখিত গুরুতর সমস্যাগুলো সৃষ্টি হতে পারে:

প্রভাবের ক্ষেত্রসমস্যাব্যাখ্যা
মানসিক স্বাস্থ্যআত্মবিশ্বাসের অভাব ও হতাশা (Depression)স্ত্রী মনে করেন তাঁর কথার কোনো মূল্য নেই। ক্রমাগত উপেক্ষা তাঁকে একাকী, মূল্যহীন ও হতাশ করে তোলে।
আবেগিক দূরত্বসম্পর্কের শীতলতা (Emotional Coldness)কথা শোনা না হলে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। স্ত্রী ধীরে ধীরে স্বামীর কাছ থেকে আবেগিকভাবে দূরে সরে যান, যা দাম্পত্যের মূল ভিত্তি (স্নেহ, মমতা) নষ্ট করে দেয়।
বিদ্বেষ ও রাগক্ষোভ ও তিক্ততা (Resentment)চাপা ক্ষোভ বাড়ে। স্ত্রী স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হারাতে পারেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে তিক্ততা বা বিদ্বেষ পোষণ করতে শুরু করেন।
ঝগড়া ও কলহঅশান্তি ও তর্কগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতের মিল না হওয়ায় সংসারে ঘন ঘন ঝগড়া হয়, যা শিশুদের মানসিক বিকাশেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যাপারিবারিক বিশৃঙ্খলাস্বামী নিজের ইচ্ছেমতো ভুল সিদ্ধান্ত নিলে পরিবার আর্থিক বা অন্য কোনো সমস্যায় পড়তে পারে, কারণ স্ত্রীর সঠিক মতামত বা আশঙ্কাকে তিনি উপেক্ষা করেছেন।

৩. সমাধানের উপায়

যেহেতু দাম্পত্য সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল, তাই কথা না শোনার অভ্যাস থাকলে তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি:

  1. যোগাযোগের ধরন পরিবর্তন: স্ত্রী যেন অভিযোগের সুরে নয়, বরং নম্র ও গঠনমূলকভাবে স্বামীর কাছে তাঁর কথা বা পরামর্শ তুলে ধরেন।

  2. সক্রিয়ভাবে শোনা (Active Listening): স্বামীর উচিত যখন স্ত্রী কথা বলছেন, তখন মোবাইল বা অন্য কাজ বন্ধ রেখে মনোযোগ দিয়ে শোনা, এমনকি যদি তিনি ভিন্ন মতও পোষণ করেন।

  3. পরামর্শের মূল্য দেওয়া: গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্ত্রীর পরামর্শকে সম্মান জানানো এবং তা না মানতে চাইলে তার কারণ যুক্তি দিয়ে বোঝানো।

  4. তৃতীয় পক্ষের সহায়তা: যদি সমস্যা গুরুতর হয় এবং বারবার বোঝানোর পরেও পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তবে একজন অভিজ্ঞ বিবাহ বা পারিবারিক পরামর্শকের (Marriage Counselor) সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।

  5. স্বামী বা স্ত্রী যেই হোক না কেন, সঙ্গী যদি অন্য সঙ্গীর কথা না শোনেন বা ক্রমাগত উপেক্ষা করেন, তবে এর ফলাফল সাধারণত অত্যন্ত নেতিবাচক হয়।

    ইসলামিক ও মনস্তাত্ত্বিক—উভয় দৃষ্টিকোণ থেকে এর প্রভাব নিচে আলোচনা করা হলো:

    ১. ইসলামিক দৃষ্টিকোণ (কর্তব্য ও সম্মান)

    ইসলামী শিক্ষায় স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই একে অপরের প্রতি সুনির্দিষ্ট কর্তব্য রয়েছে। স্বামী পরিবারের প্রধান হলেও, স্ত্রীর সম্মান, পরামর্শ ও মানসিক চাহিদাকে গুরুত্ব দেওয়া স্বামীর অন্যতম কর্তব্য।

    • সংঘাতের মূল কারণ: স্ত্রী যদি স্বামীর কোনো ইসলাম-বিরোধী বা অন্যায় কথা মানতে বা শুনতে বাধ্য না হন, তবে স্বামী যদি নেক কাজের ক্ষেত্রে বা পারিবারিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্ত্রীর কথা বা পরামর্শ উপেক্ষা করেন, তবে তা ইসলামের 'ইহসান' (উত্তম আচরণ) এবং 'মা'রুফ' (ন্যায়সঙ্গত কাজ)-এর নীতির পরিপন্থী।

    • নেতৃত্বের অপব্যবহার: স্বামী যদি কেবল নিজের সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত মনে করেন এবং স্ত্রীর ভালো পরামর্শকে অবজ্ঞা করেন, তবে তা দাম্পত্য জীবনে তাঁর নেতৃত্বের অপব্যবহার। রাসূল (সা.) তাঁর স্ত্রীদের সাথে পরামর্শ করতেন এবং তাদের আবেগ-অনুভূতির প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান দেখাতেন।

    • মানসিক অবহেলা: ক্রমাগত স্ত্রীর কথা না শোনা বা তাঁকে গুরুত্ব না দেওয়া এক প্রকার মানসিক অবহেলা, যা ইসলামে অনুমোদিত নয়। আল্লাহ তা'আলা দাম্পত্য সম্পর্ককে 'সাকান' (শান্তি) হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এই শান্তি নষ্ট হলে স্বামী গুনাহগার হতে পারেন।

    ২. মনস্তাত্ত্বিক ও পারিবারিক প্রভাব

    স্বামী স্ত্রীর কথা না শুনলে বা তাঁকে গুরুত্ব না দিলে সংসারে নিম্নলিখিত গুরুতর সমস্যাগুলো সৃষ্টি হতে পারে:

    প্রভাবের ক্ষেত্রসমস্যাব্যাখ্যা
    মানসিক স্বাস্থ্যআত্মবিশ্বাসের অভাব ও হতাশা (Depression)স্ত্রী মনে করেন তাঁর কথার কোনো মূল্য নেই। ক্রমাগত উপেক্ষা তাঁকে একাকী, মূল্যহীন ও হতাশ করে তোলে।
    আবেগিক দূরত্বসম্পর্কের শীতলতা (Emotional Coldness)কথা শোনা না হলে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। স্ত্রী ধীরে ধীরে স্বামীর কাছ থেকে আবেগিকভাবে দূরে সরে যান, যা দাম্পত্যের মূল ভিত্তি (স্নেহ, মমতা) নষ্ট করে দেয়।
    বিদ্বেষ ও রাগক্ষোভ ও তিক্ততা (Resentment)চাপা ক্ষোভ বাড়ে। স্ত্রী স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হারাতে পারেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে তিক্ততা বা বিদ্বেষ পোষণ করতে শুরু করেন।
    ঝগড়া ও কলহঅশান্তি ও তর্কগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতের মিল না হওয়ায় সংসারে ঘন ঘন ঝগড়া হয়, যা শিশুদের মানসিক বিকাশেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
    সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যাপারিবারিক বিশৃঙ্খলাস্বামী নিজের ইচ্ছেমতো ভুল সিদ্ধান্ত নিলে পরিবার আর্থিক বা অন্য কোনো সমস্যায় পড়তে পারে, কারণ স্ত্রীর সঠিক মতামত বা আশঙ্কাকে তিনি উপেক্ষা করেছেন।

    ৩. সমাধানের উপায়

    যেহেতু দাম্পত্য সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল, তাই কথা না শোনার অভ্যাস থাকলে তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি:

    1. যোগাযোগের ধরন পরিবর্তন: স্ত্রী যেন অভিযোগের সুরে নয়, বরং নম্র ও গঠনমূলকভাবে স্বামীর কাছে তাঁর কথা বা পরামর্শ তুলে ধরেন।

    2. সক্রিয়ভাবে শোনা (Active Listening): স্বামীর উচিত যখন স্ত্রী কথা বলছেন, তখন মোবাইল বা অন্য কাজ বন্ধ রেখে মনোযোগ দিয়ে শোনা, এমনকি যদি তিনি ভিন্ন মতও পোষণ করেন।

    3. পরামর্শের মূল্য দেওয়া: গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্ত্রীর পরামর্শকে সম্মান জানানো এবং তা না মানতে চাইলে তার কারণ যুক্তি দিয়ে বোঝানো।

    4. তৃতীয় পক্ষের সহায়তা: যদি সমস্যা গুরুতর হয় এবং বারবার বোঝানোর পরেও পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তবে একজন অভিজ্ঞ বিবাহ বা পারিবারিক পরামর্শকের (Marriage Counselor) সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন